পশ্চিম মুখে আমার যাত্রা-পর্ব ২
জান্দা হলো তিব্বতের এনগারি অঞ্চলের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের একটি প্রতিনিধিত্বমূলক স্থান। এখানে রহস্যময় ও কিংবদন্তিতুল্য শাংশুং রাজবংশ ছিল। গুজ রাজবংশ তিব্বত সাম্রাজ্য বা বোদ প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই রাজবংশের রাজাই শাংশুং বংশধরদের পূর্বপুরুষ। গুজ রাজবংশ ছিল সেই সময়ে তিব্বতের সবচেয়ে সভ্য স্থানীয় সরকার। সে রাজ্যের রাজধানীর ধ্বংসাবশেষের অবস্থান জান্দা জেলার জাবুরাং গ্রামে শতদ্রু নদীর তীরে। এর উচ্চতা ১৬০ তলাবিশিষ্ট আধুনিক আকাশচুম্বী ভবনের সমান। ধ্বংসাবশেষের ভিতরে রয়েছে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে উজ্জ্বল মাস্টারপিস — গুজ প্রাচীরচিত্র। তার পাশেই জান্দা জেলার থুওলিন থানার জাবুরাং গ্রাম। পর্যটকরা এখানে ভিড় করেন। এতে সেখানকার অধিবাসীদের ‘ব্যবসার সুযোগ’ তৈরি হয়েছে এবং একের পর এক পারিবারিক হোটেল চালু হচ্ছে। সারি সারি তিব্বতি-শৈলীর সুসজ্জিত পারিবারিক হোটেলগুলো পর্যটকদের প্রথম পছন্দ।
এই রহস্যময় ও মহান ভূমিতে রয়েছে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আকর্ষণীয় প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ। এটি তিব্বতের এনগারি অঞ্চলের জান্দা জেলা। এখানে ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলে এসেছে। এখানকার ধর্মীয় বিশ্বাস ও শৈল্পিক অভিব্যক্তি একে অপরের পরিপূরক।
জান্দা জেলার আশপাশ লম্বা মাটির বনে বেষ্টিত। কয়েক শ’ মিলিয়ন বছর আগে, এই মাটির বনগুলো সমুদ্রের নিচে ছিল এবং প্রকৃতিতে আকাশ-পাতাল পরিবর্তনের পর বর্তমান অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে।
জান্দা অঞ্চলের মধ্যেই গুজ রাজবংশের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। এটি একটি প্রাচীন ও রহস্যময় রাজবংশ। সাত শ’ বছর শাসন করার পর তারা রাতারাতি ইতিহাস থেকে মুছে যায়।
ভিতরে প্রবেশ করার পর আমরা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য রেখে যাওয়া সবচেয়ে উজ্জ্বল গুজ প্রাচীরচিত্রগুলো দেখে ভীষণ অবাক হই। মনে প্রশ্ন জাগে কীভাবে এক লাখ গুজ মানুষ হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে গেল?