পরিবেশ দুষণে দায়ী কার্বন থেকে সার, কোক, বিয়ার তৈরি? লেখক: ইমরুল কায়েস
এখন চীনের লক্ষ্য পরিবেশ দূষণ ও ওজোনস্তর ধ্বংসের জন্য দায়ী ক্ষতিকর কার্বণকে কিভাবে কাজে লাগানো যায়। ইতোমধ্যে সেই প্রযুক্তিও উদ্ভাবন করে ফেলেছে দেশটি। চীনের হুয়ানেং ক্লিন এনার্জি রিসার্চ ইনস্টিটিউট এই ক্ষেত্রে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে। ৩১ আগস্ট বেইজিংয়ে অবস্থিত হুয়ানেং ক্লিন এনার্জি রিসার্চ ইনস্টিটিউটে গিয়ে বিষয়টি স্বচক্ষে দেখেছি। প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত প্রযুক্তি অভিভূত করার মত। হুয়ানেংয়ের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি বাতাস থেকে কার্বণকে শোষণ করে। এজন্য ব্যবহার করা হয় একটি উচ্চ প্রযুক্তি ক্ষম
তাসম্পন্ন টাওয়ার। এরপর শোষিত কার্বণের বড় অংশ মাটির নিচে সংরক্ষণ করা হয়। পরবর্তীতে মাটির নিচে রক্ষিত কার্বণের সাথে নানা ধরনের কেমিকেল মিশিয়ে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে জ্যুওলজিক্যাল ফরমেশনের জন্য অপেক্ষা করা হয়।
সবচেয়ে অবাক করা ও মজার তথ্য হল শোষিত কার্বণকে শুধু মাটির নিচে জ্যুওলজিক্যাল ফরমেশনের জন্যই রাখা হয় না। বায়ুমন্ডল থেকে শোষিত কার্বণকে অন্যান্য কাজ ও পণ্য তৈরিতেও ব্যবহার করছে হুয়ানেং রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এই গবেষণাগারে শোষিত কার্বণকে ব্যবহার করে সার, কোক, বিয়ার উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি। কার্বণের সাথে এমোনিয়া যৌগ মিশিয়ে প্রস্তত করা হচ্ছে সার। এই সার মাটির উর্ববরতা বৃদ্ধিতে খুবই কার্যকরী। আবার কার্বণের সাথে নানা ধরনের কেমিকেল মিশিয়ে কোক এবং বিয়ারও তৈরি হচ্ছে। তবে এখনও কার্বণের এই ইতিবাচক ব্যবহার ব্যাপকভাবে শুরু হয়নি। হুয়ানেংয়ের কার্বণ শোষণাগারে স্বল্প পরিসরে কার্বণকে এসব পণ্য উৎপাদনে ব্যবহার করা হচ্ছে। শিগগিরই এর বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হবে বলে আশা করছে প্রতিষ্ঠাণটির কর্ণধাররা। কিভাবে কার্বণ থেকে সার, কোক ও বিয়ার তৈরি হচ্ছে তা স্বচক্ষে দেখে যারপর নাই অভিভূত হয়েছি। বিজ্ঞানের কল্যাণে প্রযুক্তির গুণে কোথায় চলে গেছে এরা। অদুর ভবিষ্যতে হয়তো ব্যাপক পরিসরে কার্বণ থেকে এসব পণ্য তৈরি হবে। এক্ষেত্রে চীনের ভূমিকা থাকবে সামনের সারিতে। তখন কার্বণ নি:সরণ নিয়ে বিশ্বে এমন মাতামাতি বা রেষারেষি হয়তো আর থাকবে না। কার্বণ শোষণের ফলে পরিবেশ দূষন যেমন কমবে তেমনি রক্ষিত হবে ওজোনস্তর। বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে এটা হবে একটা যুগান্তকারী পদক্ষেপ।