পতিত জমি থেকে ‘খাদ্যের গুদাম’
চীনে এমন একটি জায়গা আছে, যেখানে জমি এত উর্বর, লোকজন বলে- ‘কালো মাটিতে চিমটি কাটলে তেল বের হয়, চপস্টিক্স মাটিতে রাখলে শস্য উত্পন্ন হয়’। তবে অতীতে সেখানে ছিল শুধু জলাভূমি আর বুনো-নেকড়ে। সেখানে কোনো আবাদি জমি ছিল না। চীনারা কীভাবে অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে সেই অনাবাদি জায়গাকে উর্বর জমি ও শস্যের গুদামে পরিণত করলো? আজ এই বিষয়ে কথা বলবো।
জায়গাটির নাম হল বেইতাহুয়াং। নামের মধ্যে ‘হুয়াং’ শব্দটির অর্থ- পতিত জমি। যা উত্তর-পূর্ব চীনের হেইলুংচিয়াং প্রদেশে অবস্থিত। এর আয়তন ৫৫ হাজার বর্গকিলোমিটার। আগে জায়গাটি ছিল জনশূন্য ও নির্জন। তবে, এখন বিজ্ঞান বেইতাহুয়াং-এর কৃষি উন্নয়নে সাহায্য করছে।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং হেই লুং চিয়াং প্রদেশ পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় ছিসিং কৃষি খামারের বেইতাহুয়াং কৃষি ও কৃষিযন্ত্র কেন্দ্রে যান। তিনি বলেন, বেইতাহুয়াংয়ের বর্তমান অবস্থা উন্নয়ন সহজ কাজ নয়। চীন একে কৌশলগত ঘাঁটি হিসেবে নির্ধারণ করেছে, কৃষিকে কৌশলগত শিল্পে উন্নত করছে। অর্ধ শতাব্দী পর এখানে আকাশ পাতাল পরিবর্তন ঘটেছে। যন্ত্রায়ন, তথ্যায়ন, বুদ্ধিমত্তাকরণ, অসাধারণ সাফল্য এনেছে। বেইতাহুয়াং চীনাদের ক্ষুধা দূরীকরণে বিশাল ভূমিকা পালন করেছে।
অতীতে বেইতাহুয়াং-এ গ্রীষ্মে শুধু জলাভূমি, অনেক বন্যনেকড়ে ও মশার উত্পাত হতো। শীতকালে সবচেয়ে ঠান্ডার সময় তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। এক বছরের দুই তৃতীয়াংশই ছিল শীতকাল!
১৯৪৭ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ঘাঁটি সুসংবদ্ধ করার’ নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রথম দফা গণ-মুক্তিফৌজ এই ঊষর জমিতে এসে প্রথম কৃষি খামার স্থাপন করে। যা মুক্তিযুদ্ধের ফ্রন্ট লাইনে সমর্থন দিয়েছিল।