আকাশ ছুঁতে চাই ৫২
বিশ হাজারের বেশি মানুষ বর্তমানে পিওনি থিমের এই রিয়েলিস্টিক পেইন্টিং শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। শোনতোং প্রদেশের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এই পিওনি ফুলের ছবি বিক্রি হচ্ছে পর্যটকদের কাছে। শুধু ছবি নয়, অন্যান্য সামগ্রী যেমন ব্যাগ ,চাদর ইত্যাদিতেও পিওনি থিম ছবি ক্রেতা পর্যটকদের ভালো সাড়া পেয়েছে। সুভ্যেনির হিসেবে অনেকেই সংগ্রহ করছেন রিয়েলিস্টিক পিওনি পেইন্টিং।
অনেক অবসরপ্রাপ্ত বা প্রবীণ নারীও এই কর্মশালায় অংশ নিয়ে পিওনি ফুলের ছবি আঁকা শিখেছেন। ওয়েই লানলান মনে করেন অবসর প্রাপ্ত প্রবীণদের জন্য এই ছবি আঁকা দুইভাবে উপকার নিয়ে আসে। প্রথমত তারা অবসর সময়টা ভভালোভাবে কাটাতে পারেন। তারা জীবনে একটা ভালো বিনোদন পান। পাশাপাশি তাদের আয রোজগার বাড়ে। তাদের শিল্পকর্ম পৌছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
শিক্ষক চিন সিয়া
এমন অনেক মানুষ আছেন যারা শৈশবে বা তরুণ বয়সে জীবন ও জীবিকার চাপে ভালোভাবে লেখাপড়া শেখার সুযোগ পাননি। পরিণত বয়সে তারা আবার নতুনভাবে লেখাপড়া শিখতে চাচ্ছেন। এমন মানুষদের সাহায্যে আছেন শিক্ষক চিন সিয়া। তিনি নিংসিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের একজন বাসিন্দা। দুই সন্তানের জননী চিন সিয়া তার সংসার ও অন্যান্য কাজ সামলে অনলাইনে তার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রদান করছেন। তার অনলাইন শিক্ষার্থীরা সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। চলুন শোনা যাক তার গল্প।
চীনের নিংসিয়া হুই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের এক উদ্যোগী নারী চিন সিয়া। ৪১ বছর বয়সী চিন সিয়া বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রমের একজন শিক্ষক।
চিনসিয়ার শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগের বয়স ৪০ থেকে ৬০ বছর। তারা অনেকে গৃহবধূ, শ্রমিক এবং কৃষক। তারুণ্যে জীবন ও জীবিকার তাগিদে তারা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাননি। ইচ্ছা থাকা সত্তেও হয়তো ভালোভাবে শিখতে পারেননি গণিত কিংবা বিজ্ঞান অথবা সাহিত্য। পরিণত বয়সে তারা আবার শিক্ষা গ্রহণ করতে চাচ্ছেন। এদের অনলাইনে শিক্ষা দেন চিনসিয়া।
চিনসিয়ার জন্ম উচোং সিটিতে। মধ্যচীনের হুবেই প্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি শিক্ষকতা বিষয়ে পাঠ নিয়েছেন। একটি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে তিন বছর কাজও করেছেন। পরে স্বামীর সঙ্গে তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যৌথভাবে কাজ করেন। তিনি দুই সন্তানের জননী। সংসার দেখাশোনার কাজটাও করতে হয়। এরপরও অনলাইনে শিক্ষাদানের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে তার। প্রত্যেক শিক্ষার্থী কোর্সে অংশ নেয়ার জন্য ১০০ ইউয়ান প্রদান করে।
চিনসিয়া মনে করেন শিক্ষকতা পেশায় যে সম্মান ও ভালোবাসা পাওয়া যায় তা সত্যি অসাধারণ।
চিনসিয়া বলেন, ‘তারা যখন আমার জন্য উপহার পাঠায়, তাদের শ্রদ্ধা ভালোবাসা জানায় তখন দারুণ ভালো লাগে।’
কেউ হয়তো ঘরে তৈরি খাবার বা হাতে বোনা কোন উপহার পাঠালো। এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে শ্রদ্ধা ও শুভকামনা।
চিনসিয়া জানান, অনেক শিক্ষার্থী জীবনে কখনও কল্পনাও করেনি যে তারা একজন শিক্ষক পাবে, তারা নতুনভাবে বিদ্যা অর্জন করতে পারবে। এখন চিনসিয়ার সাহায্যে তারা লেখাপড়া শিখতে পারছেন। চিনসিয়া নিজেও তার সংসারে বাড়তি উপার্জন করতে পারছেন। নিজের ক্যারিয়ারও গড়ে তুলেছেন শিক্ষকতা পেশায়।
ওদের চোখে ফুটবলের স্বপ্ন
ফুটবল খেলায় এখন অনেক দেশের নারী এগিয়ে এসেছেন। নারীরা ফুটবলে বেশ ভালো করছেন। কিন্তু এক সময় অনেক সমাজে মনে করা হতো ফুটবল মোটেই নারীদের খেলা নয়। চীনেরও কোন কোন প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই ধরনের ধারণা ছিল। কিন্তু দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে এই ধারণার। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামে এখন মেয়েদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে ফুটবল। কিভাবে সেটি ঘটছে চলুন শোনা যাক।
দক্ষিণ পশ্চিম চীনের ছোংছিং মিউনিসিপালটির অধীনে শিচু থুচিয়া অটোনোমাস কাউন্টির এক পাহাড়ি টাউন। এখানে সানহ্য টাউন প্রাইমারি স্কুলের মেয়েরা ফুটবল খেলাকে ঘিরে বুনে চলেছে তাদের স্বপ্ন। তাদের কাছে ফুটবল শুধু মাত্র একটি খেলা নয় বরং জীবন বদলে দেয়ার পদ্ধতি।
ছিন ফুরং ছিলেন সানহ্য টাউন প্রাইমারি স্কুল ফুটবল টিমের একজন সদস্য হিসেবে খ্যাতি পায়। এই খেলার সুবাদে এখন তিনি শাংহাই শহরের তোংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার জন্য ভবিষ্যতের দুয়ার খুলে দিয়েছে এই খেলা।