আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৯৭
২০১৫ সালে তিনি তার বাড়ি থেকে বহুদূরে বাইথাংয়ে অবস্থিত পাহাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের চাকরি নিয়ে আসেন। তিনি দেখতে পান স্কুলটিতে কোন শিক্ষার্থী নেই। কারণ ভালো মানের শিক্ষার আশায় অনেকেই তাদের সন্তানদের অন্য দূরের স্কুলে পাঠিয়েছে। ছোট শিশুদের জন্য সেটা খুবই অসুবিধাজনক।
ছাং ফং তখন গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে শিশুদের এই স্কুলে পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করেন। ছোং ফংয়ের স্বামী জানান কিভাবে ছাং তার নিজের বেতানের টাকা দিয়ে শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অনেক আধুনিক প্রযুক্তির সামগ্রী কেনেন।
প্রথমে ১৭জন শিশু স্কুলে আসে। ছাং শুধু যে স্কুলেই পড়ান তা নয়, ছুটির পর শিশুদের বাড়িতে গিয়েও তাদের খোঁজ খবর নেন, হোম ওয়ার্ক করতে সাহায্য করেন।
ছাং সিওয়াংহু প্রাইমারি স্কুলের হেড মিস্ট্রেস হন। এটি ফোইয়াং লেকের মাঝখানে একটি ছোট দ্বীপে অবস্থিত। তিনি দেখেন শিশুরা বেশিরভাগই এসেছে স্থানীয় মৎস্যজীবী পরিবার থেকে।
তিনি অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ করেন তাদের সমস্যাগুলো শোনেন, সমাধানের চেষ্টা করেন।
ছাং তার স্কুলে অনেক নতুন ব্যবস্থা প্রচলন করেছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে শিশুদের সম্পৃক্ত করেছেন। শিশুশিক্ষায় ছাং এর এই আন্তরিক পরিশ্রম তাকে এনে দিয়েছে বিশেষ সম্মান। অল চায়না উইমেন’স ফেডারেশন ২০২০ সালে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছে।
সিনচিয়াংয়ে সকল জাতিগোষ্ঠী নিরাপদে ও সুখে আছে: সিপিসি প্রতিনিধি
চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিসির ২০তম ন্যাশনাল কংগ্রেস শেষ হলো সম্প্রতি। এই কংগ্রেসে চীনের বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চল থেকে যোগ দিয়েছেন প্রতিনিধিরা। এমনি একজন প্রতিনিধি জুলিয়াতি সিমায়ি। যিনি এসেছিলেন সিনচিয়াং থেকে। তিনি শোনালেন কেমন আছেন সিনচিয়াংয়ের নারী। চলুন শোনা যাক।
উত্তরপশ্চিম চীনের উইগুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ে সকল এথনিক গ্রুপ বা জাতিগোষ্ঠীর মানুষ নিরাপদ ও সুখী জীবন যাপন করে বলে জানালেন সিপিসি প্রতিনিধি জুলিয়াতি সিমায়ি। তিনি সিপিসির ২০তম ন্যাশনাল কংগ্রেসে তার অঞ্চলের একজন প্রতিনিধি
জুলিয়াতি কাশগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি ও ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি রোববার বেইজিংয়ে গ্রেট হল অব পিপলে অনুষ্ঠিত ২০তম সিপিসি ন্যাশনাল কংগ্রেসের উদ্বোধনীর আগে ‘ডেলিগেটস কোরিডোর’ এ এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, গত কয়েক দশকে সিনচিয়াংয়ে গড় মাথাপিছু আয় আগের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। ডেলিগেটস কোরিডোর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন জুলিয়াতি। তিনি বলেন, সিনচিয়াংয়ের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মানুষের আয় গত কয়েক দশকে দ্বিগুণ হয়েছে। এই অঞ্চলের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। তারা নিরাপদে ও সুখে আছে।
তিনি একজন উইগুর নারীর জীবনের কথা তুলে ধরেন। একজন উইগুর নারী রুকিয়ামা আবদুননুর। স্থানীয় জুনিয়র হাই স্কুল থেকে পাশ করার পর রুকিয়ামা স্থানীয় ভোকেশনাল স্কুলে এমব্রয়ডারির কাজ শেখেন। এরপর উরুমছির একটি পোশাক কারখানায় তিনি শিক্ষানবীশ হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি তার হোমটাউনে ফিরে এসে নিজের একটি পোশাকশিল্পের প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। সরকারি আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তায় তিনি এই প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে পেরেছেন। তিনি স্থানীয় নারীদের তার প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। ফলে এমব্রয়ডারি করে এই নারীরা স্বাবলম্বী হয়েছেন। সিনচিয়াংয়ে শিক্ষার হার বেড়েছে। এখন শিশুরা সবাই স্কুলে যাচ্ছে। শিক্ষার ফলে তাদের জীবনমান পাল্টে যাচ্ছে। এখন বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর তরুণ তরুণীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন।
‘যদি কাশগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাই ধরেন, তাহলে সেখানে একটি ডর্মে দেখবেন বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা রয়েছে। এমনকি অন্য প্রদেশ থেকেও অনেক শিক্ষার্থী এসেছে।’>>
শিক্ষার বিষয়ও অনেক রকম। ই কমার্সসহ নতুন নতুন বিষয়ে বিভাগ খোলা হয়েছে। জাতীয় উন্নয়ন নীতির ফলে সিনচিয়াং উন্নয়নের ধারায় সামনে এসেছে। এখন অবকাঠামোগত, সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি দেখছি অসংখ্য গ্র্যাজুয়েট তাদের জীবন সিনচিয়াংয়ে যাপন করছেন, উন্নতি করছেন। সিনচিয়াংয়ে আসুন, আমাদের সত্যিকারের গল্পগুলো জানুন।’জুলিয়াতি সিনচিয়াংয়ের সুখী জীবনের চিত্র তুলে ধরেন।
আজ আর কথা নয়, আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবং আমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়েন।
সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী
লেখা, গ্রন্থনা,উপস্থাপনা : শান্তা মারিয়া
সিপিসি ২০তম ন্যাশনাল কংগেসে নারী প্রতিনিধিরা যা বললেন, প্রতিবেদন: রওজায়ে জাবিদা ঐশী
তিনি ওদের বন্ধ, সিনচিয়াংয়ে সকল জাতিগোষ্ঠী নিরাপদে ও সুখে আছে: সিপিসি প্রতিনিধি প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া
অডিও সম্পাদানা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী ও শান্তা মারিয়া