আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৯৭
জ্বালানি প্রসঙ্গে প্রতিনিধিরা বলেন, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান এবং উন্নয়ন নিশ্চিত করতে চীন সর্বদা তার শক্তির উপর নিয়ন্ত্রণ রাখে। জাতীয় শক্তি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং সর্বক্ষেত্রে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ে তুলতে ব্যবহারিক পদক্ষেপ নেয় দেশটির সরকার। আর তেল শ্রমিকরা চীনের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিনিয়ত অবদান রাখছে। এক্ষেত্রেও নারীকর্মীরা পুরুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সমানভাবে কাজ করছে।
এবারের কংগ্রেসে উত্থাপিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গত একদশকে সারাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। শিক্ষায় নারীরা এগিয়ে যাওয়ায় কর্মক্ষেত্রের পরিধি বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নারীদের জীবনে এসেছে পরিবর্তন। বর্তমানে উন্নত, সমৃদ্ধ চীন বিনির্মাণের প্রতিটি ধাপে তারা অবদান রাখছে।
বিচার ব্যবস্থায় তৃণমূল পর্যায়ের জনগণকে সুবিধাজনক এবং দক্ষ বিচারিক পরিষেবা প্রদানে প্রতিনিধিরা অঙ্গীকারবদ্ধ। কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগ, প্রতিটি বিচারিক মামলায় জনগণ যাতে নিরপেক্ষভাবে ন্যায়বিচার পায় এবং দক্ষ সমাজতান্ত্রিক বিচার ব্যবস্থার বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে তারা কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ চীন। ফসলের মাঠে নারীদের অবদান পুরুষদের তুলনায় কম বলা যাবে না। নারীরা ফসল উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ কিংবা বিপণিবিতানেও রয়েছে তাদের সমান অংশগ্রহণ।
চীনা সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ। দেশের ঐতিহ্যগত সংস্কৃতিকে রক্ষায় বিভিন্নভাবে অবদান রাখছে নারীরা। এবারের ২০ তম জাতীয় কংগ্রেসে সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে দেশের সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ করা এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয় উঠে এসেছে।
গত কয়েক বছরে বিজ্ঞান ও গবেষণায় চীন রেকর্ডসংখ্যক সাফল্য অর্জন করেছে। প্রত্যেকটি সাফল্যের পেছনে পুরুষের পাশাপাশি রয়েছে নারীদের অবদান। বিশ্লেষণে উঠে আসে, জেনেটিক প্রযুক্তির বিকাশে কাজ করা জিনোমিক্স নারী বিজ্ঞানীদের কথা।
এবারের কংগ্রেসে অংশ নেয়া ২, ২৯৬ জন প্রতিনিধির মধ্যে ৬১৯ জন ছিলেন নারী প্রতিনিধি। যা মোট প্রতিনিধির ২৭ শতাংশ। ১৯ তম জাতীয় কংগ্রেসের তুলনায় চলতি বছর নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ২.৮ শতাংশ বেড়েছে।
তিনি ওদের বন্ধু
একজন শিক্ষক যিনি প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ শিশুদের শিক্ষায় বড় ভূমিকা রাখছেন তিনি অবশ্যই অনেক শ্রদ্ধেয়। এমন একজন নারী ছাং ফং। তিনি সম্মাননাও পেয়েছেন জাতীয়ভাবে।
চোখে চারকোনা বড় চশমা, পিছনে চুল শক্ত করে বাঁধা, ছাং ফংকে দেখেলেই বোঝা যায় তিনি একজন শিক্ষক। কিন্তু সত্যিকারভাবে তিনি তার ছাত্রছাত্রীদের কাছে শুধু শিক্ষকই নন, তিনি তাদের অকৃত্রিম বন্ধুও বটে।
ছাং ফং তার গ্র্যাজুয়েশনের পর ২০১১ সালে ফোইয়াংয়ের ইয়ুছাং টাউনশিপের থুথাং প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হন। এখানে চারবছরের মতো খুব সাফল্যের সঙ্গে শিক্ষকতা করেন। পরে তার মনে হয় এখানে আরামের জীবন নয় বরং আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে দুর্গম এলাকায় গ্রামীণ শিশুদের পড়াবেন তিনি।
পূর্ব চীনের চিয়াংসি প্রদেশের ফোইয়াং কাউন্টি। এখানে দুর্গম পাহাড়েরর ভিতর অবস্থিত লিলিং প্রাইমারি স্কুল।
কাছাকাছি শহরের দূরত্ব এখান থেকে ১২০ কিলোমিটার। এখানে তিনি দেখেন অনেক ছেলেমেয়ে তাদের দাদাদাদী বা নানানানীর কাছে থাকে। বাবা মায়েরা চাকরি করেন অন্যত্র। তিনি এই ছেলেমেয়েদের কাছে হয়ে ওঠেন মায়ের মতো।