আকাশ ছুঁতে চাই ৮২
এদিকে, এমন কিছু কৌশল শেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে যার মাধ্যমে দেশের নারী উদ্যোক্তারা নির্ভীকভাবে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত হবে বলে জানান হাইনান ব্রডকাস্টিং গ্রুপের ডেপুটি এডিটর-ইন-চিফ ওয়াং লিং।
চলতি বছর বহুমুখী প্রচার কৌশলের মাধ্যমে, নারী পেশাজীবীদের সেরা পারফরম্যান্স এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাদের তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
গান: যাকে তুমি ভালোবাসো, শিল্পী আদিলে সিদিক
চীনের উইগুর স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল সিনচিয়াংয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। উইগুরদের লোকজ গান যেমন শ্রুতিমধূর তেমনি এতে রয়েছে উৎসবের আমেজ। উইগুর লোকজ গানের একজন বিখ্যাত শিল্পী আদিলে সিদিক। তিনি পাশ্চাত্যের শিল্পী মারিয়া ক্যারির গায়কী ভঙ্গীতে উইগুর লোক সংগীত পরিবেশন করে কয়েক বছর ধরে বেশ খ্যাতি পেয়েছেন।।
এখন আমরা শুনবো আদিলে সিদিকের কণ্ঠে উইগুর তাগ মেশরেপ ঘরানার একটি গান। গানটির শিরোনাম যাকে তুমি ভালোবাসো।
চীনের ঐতিহ্যবাহী কালো মাটির পাত্র
চীনের একটি বিশেষ ঐতিহ্যবাহী শিল্প কালো মাটির পাত্র। চারশ বছরের এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের ধারা বহন করে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌছে দিচ্ছেন সু শিচু। এই শিল্পী নারীর গল্প শুনবো একটি প্রতিবেদনে।
চীনের দক্ষিণ পশ্চিমের প্রদেশ ইউননান। এখানে অনেক এথনিক গ্রুপের বাস। এই প্রদেশের চেনইউয়ান কাউন্টিতে বাস করেন ই, হানি এবং লাহু সংখ্যালঘু জাতির মানুষ। এখানকার ঐতিহ্যবাহী শিল্প হলো ব্ল্যাক পটারি। বিশেষ এক ধরনের কালো মৃৎপাত্রের উপর নকশা করা হয় এই লোকজ শিল্পে। চারশ বছর ধরে এই শিল্পধারা বয়ে চলেছে। ইউননানের অবস্তুগত সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের তালিকায় এই ব্ল্যাক পটারিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ২০১৯ সালে। এই সংস্কৃতির একজন উত্তরাধিকারী সু শিচু। শৈশবেই ব্ল্যাক পটারির শিল্পের সঙ্গে পরিচয় ঘটে তার। গেল ৩০ বছর ধরে তিনি সৃষ্টি করছেন অপূর্ব সুন্দর সব শিল্পকর্ম। মাটি দিয়ে তৈরি করছেন চায়ের কেতলি, ফুলদানিসহ বিভিন্ন রকম শোপিস।
চেনইউয়ান কাউন্টিতে পাওয়া যায় বিশেষ ধরনের এঁটেল কাদা মাটি। ১৬টি ধাপে তৈরি হয় শিল্পসামগ্রী। চাকে মৃৎপাত্র গড়ার পর আগুনে পোড়ানোর আগেই কাঁচা পাত্রে খোদাই করা হয় নকশা।এই নকশা করার কাজটিই সবচেয়ে কঠিন। দক্ষহাতে সেটি করেন সু। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একজন উত্তরাধিকারী শিল্পী হিসেবে তিনি এই লোকজ শিল্পকে পৌছে দিচ্ছেন পরবর্তি প্রজন্মের কাছে।
স্বেচ্ছাসেবী চান ইউ চেন
মানুষের জন্য সেবামূলক কাজ করার মানসিকতা থেকেই স্বেচ্ছাসেবী হয়ে ওঠেন অনেকে। কেউ বিপদে পড়লে নিজের সবটুকু দিয়ে পাশে থাকেন তারা। বন্ধু হয়ে ওঠেন অসহায় মানুষের। এমনই একজন স্বেচ্ছাসেবী চীনা তরুণী চান ইউ চেন। নিজের সীমানা পেরিয়ে অন্য দেশেও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন তিনি। বিস্তারিত প্রতিবেদনে।
অসহায় মানুষের হাত শক্ত করে ধরে রাখবার সাহস বুকে নিয়েই একজন হয়ে ওঠেন স্বেচ্ছাসেবী। এজন্য দক্ষতার পাশাপাশি থাকতে হয় অন্যের জন্য কাজ করার অদম্য ইচ্ছাশক্তি।
যুদ্ধ কিংবা বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়। এই কঠিন কাজটাই সম্ভব করেছেন চীনা তরুণী চান ইউ চেন।
২০২০ সালের ৪ আগস্ট। লেবাননের রাজধানী বৈরুতের সমুদ্রঘেঁষা এলাকায় ঘটে যায় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। এতে ঘরবাড়ি হারায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ। বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চারপাশ। এখানকার অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ছুটে আসেন চান ইউ চেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বড় ভূমিকা রাখেন চান ইউ ও তার ওয়ার্কিং টিম।
লেবাননের বাসিন্দাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়েছেন চান ইউ। তাদের সঙ্গে কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। শুনেছেন অজানা নানা গল্প। তারাও সাদরে গ্রহণ করেছেন এই চীনা তরুণীকে। অসহায় মানুষদের বিধ্বস্ত ঘর বাড়ি মেরামতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন তারা।
বিশাল মঞ্চে তাদের গল্পগুলো সবার সামনে তুলে আনেন চান ইউ। এরকম ১০টিরও বেশি জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন তিনি। সেখানে লেবাননের নাগরিকরা পরিচিত হয়েছেন একে অপরের সঙ্গে। সাহস পেয়েছেন সামনে এগিয়ে যাবার।
স্বেচ্ছাসেবী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছে চীনা তরুণ সমাজের। হৃদয়ের উষ্ণতা দিয়ে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে চান তারা।
বাংলাদেশের ৫০ জন নারী কবির কবিতা নিয়ে লন্ডন থেকে বই
বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সম্প্রতি লন্ডন থেকে প্রকাশিত একটি বই বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে পাঠক মহলে। ‘অ্যারাইজ আউট অব দ্য লক’ নামে বইটিতে ৫০ জন বাংলাদেশী নারী কবির কবিতার ইংরেজি অনুবাদ সংকলিত হয়েছে। এখানে সুফিয়া কামাল(১৯১১-১৯৯৯) থেকে শুরু করে শ্বেতা শতাব্দী এষ(১৯৯২)এর মতো নবীনতম কবির কবিতাও স্থান পেয়েছে। ফলে গত পঞ্চাশ ষাট বছরে বাংলাদেশের কবিতার নারী কণ্ঠস্বরকে চিনে নেয়া যাচ্ছে। বইটিতে কবিতার সম্পাদনা ও সংকলনের কাজ করেছেন বাংলাদেশের লেখক, সমালোচক ও অনুবাদক আলম খোরশেদ। কবিতাগুলো অনুবাদের কাজ করেছেন হায়দ্রাবাদনিবাসী ভারতের কবি, অনুবাদক ও সাহিত্যের শিক্ষক নবীনা দাস।
প্রত্যেক কবির দুটি করে কবিতার ইংরেজি অনুবাদ রয়েছে বইতে। প্রত্যেক কবির সংক্ষিপ্ত পরিচিতিও রয়েছে। গত ষাট সত্তর বছরে বাংলাদেশের সমাজ জীবনের পরিবর্তন এবং নারীর অন্তর্জীবনের পরিবর্তন উঠে এসেছে এই বইতে সংকলিত ৫০ জন বাংলাদেশী নারী কবির কবিতায়।
প্রতিবন্ধিতাকে হার মানালেন লি হাও
শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে হার মানিয়ে চীনের মেয়ে লি হাও তার চেনা অচেনা অনেক মানুষের কাছে হয়ে উঠেছেন প্রেরণা।
হুনান প্রদেশের ছাংদা শহরের মেয়ে লি হাওকে চলাফেরা করতে হয় হুইল চেয়ারে চড়ে। প্রাইমারি স্কুলে পড়ার সময় একটি দুর্ঘটনায় প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ে লি হাও। কিন্তু হুইল চেয়ারে চলাফেরা করলেও লেখাপড়ায় সে সবসময়েই মনোযোগী ছিল।
সম্প্রতি চীনের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা কাওখাও তে উচ্চ ফলাফল করে সবাইকে চমকে দিয়েছে লি হাও। তার এই ফলাফল প্রমাণ করেছে দৃঢ় মনোবল ও পরিশ্রম দিয়ে একজন মানুষ শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে অতিক্রম করেও এগিয়ে যেতে পারে জীবনের পথে।
আজ আর কথা নয়, আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা। আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবংআমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.
আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। চাই চিয়েন।
সার্বিক সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী
লেখা, গ্রন্থনা, উপস্থাপনা : শান্তা মারিয়া
হাইনানে উদ্যোক্তা নারীদের প্রতিযোগিতা, প্রতিবেদন রওজায়ে জাবিদা ঐশী
বিজ্ঞানে এগিয়ে যাচ্ছেন চীনের নারী . চীনের ঐতিহ্যবাহী কালো মাটির পাত্র, বাংলাদেশের ৫০ জন নারী কবির কবিতা নিয়ে লন্ডন থেকে বই , প্রতিবন্ধিতাকে হার মানালেন লি হাও: প্রতিবেদন শান্তা মারিয়া
স্বেচ্ছাসেবী চান ইউ চেন, প্রতিবেদন হাবিবুর রহমান অভি
অডিও সম্পাদনা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী ও শান্তা মারিয়া