‘বিজনেস টাইম’ পর্ব- ৪
চীন ও চীনের বাইরের দুনিয়ার ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি-উন্নয়নের হালচাল নিয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘বিজনেস টাইম’।
এই পর্বে থাকছে:
১. বাংলাদেশে মাত্র ছয় বছরে স্মার্ট ফোনে বাজার মাতাচ্ছে চীনা কম্পানী ভিভো
২. চীনে কঠোর পরিশ্রমেই চলতি বছরে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি সম্ভব
৩. চীনের ফোল্ডেবল স্ক্রিন স্মার্ট ফোনের বাজার বড় হচ্ছে
সাক্ষাৎকার:
স্মার্ট ফোনের কারখানার প্রসঙ্গ এলে অবধারিতভাবে চলে আসবে চীনের নাম। চীনে উৎপাদন হওয়া নানা নামিদামি ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফোন এখন সারা বিশ্বের মানুষের হাতে হাতে। বাংলাদেশে স্মার্টফোন নিয়ে সাত বছর আগে ব্যবসা শুরু করে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ভিভো। বাজারে শীর্ষ স্থানের একটি এখন ভিভোর দখলে। এত দ্রুত এমন জনপ্রিয়তার নেপথ্যে কী কারণ, এবং বাংলাদেশের বাজার সম্পর্কে তাদের মতামত জানতে চাওয়া হলে চায়না আন্তর্জাতিক বেতারকে ভিভো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড লি যা বললেন-
“বাংলাদেশে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। এতে আমরা সবাই অবাক। এখানকার ব্যবসায়িক পরিবেশও ভালো। আমরা এখানে সরকার ও সমাজ থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি।
ভিভো ৭ বছর ধরে বাংলাদেশে অফিসিয়ালি কাজ করছে। প্রতি বছর ব্যবসায় আমরা উন্নতি করছি, বাণিজ্যের পরিবেশও ভালো হচ্ছে। এক কথায় যদি বলি—বাংলাদেশ একটি কর্মশক্তি ও সম্ভাবনায় ভরপুর দেশ। এদেশে ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে এখন পর্যন্ত ভিভো স্মার্টফোন ব্যবহারকারী আছে ৭০ লাখ।
ভিভোর কৌশলের মূলমন্ত্র হলো ‘মোর লোকাল মোর গ্লোবাল’অর্থাৎ স্থানীয় বাজারের হাত ধরেই পৌঁছাতে হবে বিশ্ব বাজারে। এটাই হচ্ছে দীর্ঘ সময় সফলতার সঙ্গে ব্যাবসার কারণ। এর অর্থ হলো, ভিভো সবসময় তার ভোক্তা, অংশীদার, কর্মীদল এবং সর্বোপরি সমাজের ভালোর জন্য সবোর্চ্চটা করার চেষ্টা করে।”
প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা কৌশল ও কাজের পদ্ধতি নিয়ে তিনি বলেন,
“ভিভোর আছে তিন হাজারেরও বেশি কর্মী। চীনা ও বাংলাদেশি সবাই এক হয়ে কাজ করছে। আমরা সবাই এদেশের সংস্কৃতিকে হৃদয়ে ধারণ করি। এক পরিবারের মতো কাজ করি। এক সঙ্গে থাকি, এবং মজাও করি।”
বিশ্লেষণ পর্ব:
চীনের এই বছরের সদ্য সমাপ্ত দুই অধিবেশনে, ২০২৪ সালের জন্য ৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে চীন সরকার।
পিকিং ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক চৌ লিয়ান মনে করেন, এই লক্ষ্যমাত্রা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে এবং এই ধরনের লক্ষ্য দেশের উদ্যোক্তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
তবে এই আত্মবিশ্বাস শুধু দেশি উদ্যোক্তাদের মাঝেই বাড়বে না। চীনের প্রতি বিদেশি উদ্যোক্তাদের আস্থাও বাড়াবে।
উদাহরণস্বরূপ, ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসির কথা বলা হয়েছে সিনহুয়ার এক বিশ্লেষণে। চীনজুড়ে এখন কেএফসির ১০ হাজার শাখা ছাড়িয়ে গেছে। সামনে এর শাখা আরও বাড়বে বলেও জানানো হয়েছে। জানুয়ারিতে, ছেংতু শহরে নতুন করে একটি বড় আকারের পরিষেবা কেন্দ্র চালু করেছে নেদারল্যান্ডসের এয়ারবাস। ইউরোপের বাইরে এয়ারবাসের এটাই প্রথম এ ধরনের সেবা কেন্দ্র।
শুধু এয়ারবাস বা কেএফসি নয়, ইউরোপীয় চেম্বার অফ কমার্স চীনের ওপর সম্প্রতি একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল। তাতে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেওয়া বিদেশি কম্পানিগুলোর প্রায় ৫৯ শতাংশই চীনকে তাদের শীর্ষ তিন বিনিয়োগ গন্তব্যের একটি হিসেবে দেখছে।