চলতি বাণিজ্যের ২৩তম পর্বে
“মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয় দেশকেই মনে রাখতে হবে তারা উভয়েরই পরস্পর নির্ভরশীল। দুই দেশের এক সঙ্গে কাজ করার, পরস্পরকে সহযোগিতা করার ও একসঙ্গে ভূমিকা পালনের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে। সংঘাত তৈরি করা ও কিছু কিছু সমস্যা জিইয়ে রাখা কারও জন্যই কল্যাণকর হবে না। উভয়ের জন্যই একইরকম পরিবেশ তৈরি করে বৈশ্বিক পর্যায়ে ভূমিকা পালন করা জরুরি। তবে এটি বলার চেয়ে বাস্তবায়ন করা কঠিন।“
তাদের মতে, মার্কিন প্রেসিডন্ট জো বাইডেন বিভিন্ন সময় যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা সত্যিকার ও পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করলে দুই দেশের মধ্যকার মতপার্থক্যও কমে আসবে এবং চীন-মার্কিন সম্পর্ক একটি বলিষ্ঠ অবস্থা ফিরে পাবে।
ভিনদেশে চীন:
রেকর্ড মার্কিন ক্রয়াদেশ পেয়েছে চীনা কোম্পানি সানি
সাজিদ রাজু, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: চীনের শীর্ষ ভারি যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সানি হেভি ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহু পণ্যের ক্রয়াদেশ পেয়েছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনেক্সপো-কন প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের পরই বিরাট অংকের ক্রয়াদেশ পেয়েছে চীনা এই কোম্পানিটি।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, পদর্শনীতে অংশ নেওয়ার প্রথম দিনই ১০০ মিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের ক্রয়াদেশ আসে মার্কিন ক্রেতাদের কাছ থেকে। চায়না সিকিউরিটিজ জার্নালে এমন তথ্য প্রকাশ করা হয়।
সানি হেভি ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি জানায়, প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন করা ৩৪টি পণ্য প্রদর্শনীতে দেখানো হয় এবং এসব পণ্য উৎপাদন করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই।
সানি আমেরিকা’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিয়ে মেংতাও বলেন, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও ভারতের অন্তত ৪০ হাজার ক্রেতা তাদের পণ্যগুলো দেখেছে। বিশেষ করে প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গ্রাহকদের কাছে কোম্পানিটির তৈরি করা পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
এর আগে ২০১০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে সানি হেভি ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেড। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের পিসট্রি শহরে উৎপাদন ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ঢেলে সাজানো হয় কোম্পানিটির মানব সম্পদ বিভাগ।
কোম্পানি প্রোফাইল:
চীনকে ১৬০টি বিমান সরবরাহ করবে এয়ারবাস
সাজিদ রাজু, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: ইউরোপিয়ান বিমান প্রস্তুতকারী সংস্থা এয়ারবাস সম্প্রতি চীনের সঙ্গে ১৬০টি বিমান বিক্রির চুক্তি সই করেছে। এর ফলে চীনের বিমান বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে এই বিপুল সংখ্যক বাণিজ্যিক বিমান।
চীনের এভিয়েশন সাপ্লাইস হোল্ডিং কোম্পানির সঙ্গে এই চুক্তি সই করে এয়ারবাস। এসব বিমানের মধ্যে থাকবে ১৫০টি এ-থ্রি-টু-জিরো মডেলের ফ্যামিলি এয়ারক্র্যাফ্ট ও ১০টি এ-থ্রি-ফাইভ-জিরো ড্যাশ নাইন জিরো-জিরো মডেলের ওয়াইড-বডি এয়ারক্র্যাফ্ট। এভিয়েশন বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনা মহামারির পর চীনের বিমান পরিবহনে যে আশার সঞ্চার হয়েছে তারই প্রতিফলন এই বিমান ক্রয় চুক্তি।
এদিকে এয়ারবাস জানিয়েছে, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর চীন সফরের সময় সঙ্গে ছিলেন এয়ারবাসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গুইলাওমে ফাওরি। এ সময় চীনের তিয়ানচিন ফ্রি ট্রেড জোন ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড ও এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন অব চায়না লিমিটেডের সঙ্গে তার চুক্তি সই হয়। এই চুক্তির আওতায় তিয়ানচিনের কারখানায় এ-থ্রি-টু-জিরো মডেলের বিমান পুনঃসংযোজনের দ্বিতীয় লাইনের কার্যক্রম শুরু হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ। এর ফলে ২০২৬ সালের মধ্যে অন্তত ৭৫টি এ-থ্রি-টু-জিরো মডেলের ফ্যামিলি এয়ারক্র্যাফ্ট প্রস্তুত করা সম্ভব হবে।
এয়ারবাসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গুইলাওমে ফাওরি বলেন, তাদের ব্যবসা প্রকৃতিগতভাবেই বৈশ্বিক। কাজেই করোনা মহামারির পর এখন আবারো কাছে আসার সুযোগ বলেও মনে করেন তিনি।
চীনের বিমান পরিবহন বাজারে এয়ারবাসের আরও ভালো ব্যবসা করার সুযোগ সামনে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চীনা অংশীদারদের সঙ্গে এয়ারবাসের ঘনিষ্ঠতা ও সহযোগিতা সামনের দিনগুলোতে আরও বাড়বে।