মেড ইন চায়না: পর্ব-২৫: সয়াসস
· পাকস্থলীতে পাচক রসের নিঃসরণ বাড়ায় সয়াসস, যাতে করে খাদ্য দ্রুত হজম হয়।
· সয়াসসে থাকা পলিস্যাকারাইড আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয়তা বাড়ায়।
· তবে এও জেনে রাখুন, সয়াসসে সোডিয়াম আছে বলে বেশি পরিমাণে এটি গ্রহণ করা উচিত নয়।
বিশ্বে এখন বলতে গেলে বেশিরভাগ রান্নাঘরেই পাওয়া যাবে চীনের আবিষ্কার সয়াসস। অনেক এশিয়ান দেশে একটি প্রধান উপাদান এবং বিশ্বের বাকি অংশে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এটি হালকা থেকে ডার্ক এবং পুরু থেকে তরল অনেক প্রকারেরই হতে পারে।
এবার সয়াসস নিয়ে অন্যরকম কিছু তথ্য শোনা যাক নাজমুল হক রাইয়ানের কাছ থেকে
· যারা মাংস খান না, তাদের খাবারের স্বাদ বাড়ানোর কথা ভেবেই মূলত সয়াসস আবিষ্কার করা হয়।
· ১৭ শতকের দিকে সয়াসস ছিল অভিজাত পণ্য। মধ্যবিত্তরা তখন সয়াসসের সামান্য স্বাদ পেতে উন্মুখ হয়ে থাকত।
· বাজারে এখন অনেক সয়াসস পাওয়া যায়, যেগুলো প্রথাগত চীনা রেসিপিতে তৈরি নয়। গাঁজানো প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে এগুলোয় ব্যবহার করা হয় রাসায়নিক উপকরণ। তবে চীনের সিছুয়ান প্রদেশের লেচি শহরের মতো অনেক অঞ্চলেই প্রথাগত পদ্ধতিতে মাসখানেক ধরে সয়াবিন ও অন্যান্য শস্যের গাঁজন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় সয়াসস।
· এশিয়ান সুপ ও নানা ধরনের স্টক তৈরিতে সয়াসস একটি অপরিহার্য উপাদান।
· আচার তৈরি ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ভিনেগারের মতো সয়াসসও প্রাকৃতিক প্রিজারভেটিভের কাজ করে।
· সয়াসস নিজে এক ধরনের স্বয়ংসম্পূর্ণ সস হলেও আরও কিছু সস তৈরির ভিত্তি হিসেবেও এটি ব্যবহার করা হয়।
· এক টেবিল চামচ সয়াসসে থাকে ৮ থেকে ১০ ক্যালোরি। তাই অল্প শর্করার ডায়েটেও এটি কাজে আসে।
· চীনের পর সয়াসস রপ্তানিতে শীর্ষ চারটি দেশ হলো নেদারল্যান্ডস, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুর।
সয়াসসের জন্ম যে চীনে, সেই চীন এখনও এগিয়ে আছে সয়াসস উৎপাদন ও বাণিজ্যে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সয়াসস উৎপাদনকারী দেশ নেদারল্যান্ডসের চেয়ে তিন গুণ বেশি সয়াসস তৈরি করে চীন। প্রতিবছরই চীনা সয়াসসের উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়ছে। ২০১৯ সালে যেখানে চীন থেকে প্রায় ১৫ কোটি ডলারের সয়াসস রপ্তানি হয়েছিল, সেখানে চলতি বছর সংখ্যাটা ২০ কোটি ডলার ছাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। আবার অভ্যন্তরীণ বাজার মিলিয়ে এ বছর এ খাতে আয় হতে পারে প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলার।
হাজার বছর আগের চীনের তৈরি এই সয়াসসের প্রতি গত দুই দশকে বিশ্বের আকর্ষণ অনেকটা আচমকাই বেড়েছে বলা যায়। কেননা, গত ২০ বছরে বিশ্বে সয়াসসের চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণ। ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বজুড়ে এই সয়াসসের বাজার প্রায় ৬৪ বিলিয়ন ডলার হবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: ফয়সল আবদুল্লাহ
অডিও সম্পাদনা: নাজমুল হক রাইয়ান
কণ্ঠ: শান্তা/ফয়সল/রাইয়ান
সার্বিক তত্ত্বাবধান: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী