মেড ইন চায়না: পর্ব-২৫: সয়াসস
প্রাচীনকালে কীভাবে তৈরি হতো চিয়াংইয়ৌ তথা সয়াসস? উনিশ শতকের যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও বিশিষ্ট চীন বিশেষজ্ঞ স্যামুয়েল ওয়েলস উইলিয়ামস লিখেছেন, চীনের তৈরি সেরা সয়াসসটি বানানো হতো সয়াবিনকে নরম করে সিদ্ধ করে। সিদ্ধ সয়াবিনে সমপরিমাণ গম বা বার্লি যোগ করে সেটাকে গাঁজানোর জন্য রেখে দেওয়া হয়। পরে তাতে যোগ করা হতো লবণ ও লবণের তিনগুণ পরিমাণ পানি। পুরো মিশ্রণটিকে রেখে দেওয়া হতো তিন মাস। পরে সেটাকে চাপ দিয়ে ও ছেঁকে বের করে নেওয়া হতো সয়াসস বা চিয়াংইয়ৌ।
প্রথম পর্যায়ে চীন থেকে চিয়াংইয়ৌ বা সয়াসসের ফর্মুলা যায় জাপানে। এর আগে অবশ্য জাপানে মাছের এক ধরনের সসের প্রচলন ছিল। তবে সেটা খেতেন না সবজিভোজী বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা। চীন থেকে সপ্তম শতকের দিকে ওই সন্ন্যাসীরা সয়াসস নিয়ে যান জাপানে।
এরও অনেক পরে ১৬০০ সালের দিকে পর্তুগিজ ও ডাচ বণিকরা সয়াসস নিয়ে আসে ইউরোপে। চীনা সয়াসস তখন বেশি বেশি রপ্তানি হতো ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসে।
অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে চলুন সয়াসসের কিছু স্বাস্থ্যগুণের কথা শোনা যাক শান্তা মারিয়ার কাছ থেকে
· সয়াসসে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা কোষের ক্ষয় রোধ করে। ডার্ক সয়াসসে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তুলনামূলক বেশি।
· সয়া সসে আছে খনিজ উপাদান, ভিটামিন বি, সেলেনিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে এগুলো লড়াই করে।
· আমাদের পরিপাকতন্ত্রের জন্য সয়াসস উপকারী। এর কিছু উপাদান প্রি-বায়োটিকের কাজ করে, যা আমাদের পরিপাকতন্ত্রে থাকা ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য ঠিক রাখে।
· সয়াসস শরীরে আইএল-৬ নামের একটি প্রোটিনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ওই প্রোটিনটি শরীরে নানা ধরনের প্রদাহ তৈরি করে।
· কিছু অ্যালার্জি কমাতেও উপকারে আসে চিয়াংইয়ৌ বা সয়াসস।