মেড ইন চায়না: পর্ব-২৫: সয়াসস
হাজার বছর আগের কাগজ, চা এবং নুডলস থেকে শুরু করে আজকের প্যাসেঞ্জার ড্রোন, কিংবা নতুন জ্বালানির গাড়ি। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বসভ্যতা এগিয়ে চলেছে চীনের শক্তিশালী আবিষ্কারের হাত ধরে। নানা সময়ে দারুণ সব আবিষ্কার করে আধুনিক সভ্যতার ভিত গড়ে দিয়েছে চীন। আর সেই সব আবিষ্কার নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজন মেড ইন চায়না।
মেড ইন চায়নার ২৫তম পর্বে সাথে আছি আমি ফয়সল আবদুল্লাহ...আজকের পর্বে থাকছে চীনের আবিষ্কার সয়া সসের কথা।
সভ্যতা মানেই শুধু চকচকে সব প্রযুক্তি কিংবা বড় বড় দালানকোঠা নয়, সভ্যতার সঙ্গে নতুনত্ব এসেছে আমাদের খাবারের মেনুতেও। মানুষ দিনে দিনে যত আধুনিক হয়েছে, ততই লম্বা হয়েছে সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা। তবে খাবারটি যতই পাঁচ তারকা মানের কিংবা সুস্বাদু হোক না কেন, কিছু উপাদান আছে যেগুলো বদলায়নি হাজার বছরেও। এমনকি একটি উপাদান আছে যেটা ছাড়া, এখনকার নামিদামি রেস্তোরাঁর অভিজাত খাবার-দাবারের কথা ভাবাই যায় না। বলছিলাম সয়াসসের কথা। আজ থেকে দুই হাজার দুইশ বছর আগে যে সয়াসসের জন্ম চীনে।
সয়াসস, চীনা ভাষায় যাকে বলে চিয়াংইয়ৌ। দুই হাজার দুইশ বছর আগে চীনের পশ্চিম হান রাজবংশের সময় রান্নার স্বাদ বাড়াতে সয়াবিনের এক ধরনের পেস্ট তৈরি করা হতো। ওই পেস্টটাকে দীর্ঘসময় সংরক্ষণ করে নানাভাবে রান্নায় ব্যবহার করতো চীনারা। ওটাই ছিল প্রাচীনতম সয়াসস। পরে সোং রাজবংশের সময় আসে আধুনিক সয়াসস, যার কথা লেখা রয়েছে ওই সময়কার লেখা কিছু লিপিতে। এক হাজার সালের দিকে সোং রাজবংশের সময় সয়াসস বা চিয়াংইয়ৌ এর আধুনিক রূপ প্রকাশ পায়। এ সময় রচিত শানচিয়া ছিংকং নামের একটি বইতে পাওয়া যায় সয়াসসের বিস্তারিত তথ্য ও রেসিপি।
প্রাচীনকালে ফিশ সসের প্রচলনও শুরু হয় চীনে। চৌ রাজবংশের সময় মাছকে গাঁজানোর সময় তাতে লবণের পাশাপাশি সয়াবিনও মেশানো হতো। অর্থাৎ ওই সময় সয়াসস ও ফিশসসকে মিশিয়ে একটি সস তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে অবশ্য নিরামিষাশিদের মধ্যে সয়াসসের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায় এবং আলাদা হয়ে যায় ফিশ সস।