মেড ইন চায়না : পর্ব-১৯ : ফাস্ট টেলিস্কোপ
২০১১ সালে শুরু হয় কাঠামোর নির্মাণ। ৫ বছর পর মহাকাশের প্রথম আলোর সংকেত ধরা পড়ে এতে। ২০২০ সালে পুরোদমে কাজ শুরু করে টেলিস্কোপটি। চীন সরকারের অর্থায়নে তৈরি টেলিস্কোপটির দায়িত্ব পায় চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেসের ন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরিজ।
মহাবিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে অনবরত ছুটে আসা রেডিও সংকেত শনাক্ত করাই এ টেলিস্কোপের কাজ। টেলিস্কোপটিতে আছে সাড়ে ৪ হাজার ধাতব প্যানেল। অধিবৃত্তাকার এই প্যানেলগুলোকে চাইলে প্রয়োজনমতো ঘোরানো যায়। এতে করে আকাশের নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলজুড়ে এটিকে তাক করা যায়। প্যানেলগুলোয় এসে পড়ে রেডিও সংকেত। সেই সংকেত তাৎক্ষণিকভাবে পৌঁছে যায় টেলিস্কোপের কেন্দ্রে থাকা ফোকাল পয়েন্ট বা ফিড কেবিনে। মূল ডিশ থেকে ১৪০ মিটার উঁচুতে থাকা ওই কেবিনটি হলো এই টেলিস্কোপের প্রাণকেন্দ্র। তাতেই প্রক্রিয়াকরণ করা হয় প্রতিফলিত রেডিও সংকেত।
২০১৭ সালের আগস্টে, পৃথিবী থেকে ১৬ হাজার ও চার হাজার একশ আলোকবর্ষ দূরের দুটো পালসার নক্ষত্র শনাক্ত করে ফাস্ট। সেই থেকে আজ পর্যন্ত এটি শনাক্ত করেছে ৯০০টিরও বেশি নতুন পালসার নক্ষত্র। সংখ্যাটা গুরুত্বপূর্ণ এ কারণে যে, গত ৫০ বছরে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা সব মিলিয়ে মোট তিন হাজার পালসার নক্ষত্র শনাক্ত করতে পেরেছেন।
কিন্তু ফাস্ট-এর জন্য এই পালসার নক্ষত্র শনাক্ত করাটা কেন এত গুরুত্বপূর্ণ। গবেষকরা জানিয়েছেন, মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণার দুটো বড় বিষয় হলো মাধ্যাকর্ষণজনিত রেডিয়েশন ও ব্ল্যাকহোল। এ দুটো গবেষণাতেই প্রাথমিক তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয় পালসার নক্ষত্র থেকে আসা রেডিও তরঙ্গ।
গতবছর চীনের তৈরি এই টেলিস্কোপে শনাক্ত করা হয় এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত সবচেয়ে বড় মেঘ বলয়। হাইড্রোজেন পরমাণুর তৈরি ওই মেঘ বলয়টি ছিল ২০ লাখ আলোকবর্ষ চওড়া, যা কিনা আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির চেয়েও ২০ গুণ বড়।