মেড ইন চায়না: পর্ব-১৫: রেশম
হাজার বছর আগের কাগজ, চা এবং নুডলস থেকে শুরু করে আজকের প্যাসেঞ্জার ড্রোন। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বসভ্যতা এগিয়ে চলেছে চীনের শক্তিশালী নানা আবিষ্কারের হাত ধরে। একেক সময়ে দারুণ সব আবিষ্কার করে আধুনিক সভ্যতার ভিত গড়ে দিয়েছে চীন। আর সেই সব আবিষ্কার নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজন মেড ইন চায়না।
মেড ইন চায়নার ১৫তম পর্বে সাথে আছি আমি ফয়সল আবদুল্লাহ...আজকের পর্বে থাকছে চীনের আবিষ্কার রেশমের কথা।
মানুষ প্রথম সভ্য হয়েই গায়ে চাপিয়েছিল পোশাক। কিন্তু আজ থেকে সাড়ে আট হাজার বছর আগে প্রাচীন চীনে নতুন প্রস্তর যুগের একটি সমাধি খুঁড়ে যা পাওয়া গিয়েছিল তা দেখে অনেক ইতিহাসবিদের চোখ উঠে গিয়েছিল কপালে। ওই সময়ই চীনে রেশমের ব্যবহার ছিল বলে জানালেন প্রত্নতাত্তিকরা। পরে সেই রেশমের হাত ধরেই সারা বিশ্বের বস্ত্রশিল্পে আসে আধুনিকতা ও বিলাসিতার ছোঁয়া। কয়েক হাজার বছর পেরিয়ে গেলেও রেশম তৈরির পদ্ধতিতে আসেনি কোনো পরিবর্তন। চীনের দেখানো পথে এখনও রেশমগুটি থেকেই তৈরি হচ্ছে দামি এ বস্তুটি।
সাড়ে আট হাজার হোক বা পাঁচ হাজার বছর হোক, চীনেই যে রেশমের জন্ম সেটার কথা লিখে গিয়েছিলেন স্বয়ং কনফুসিয়াস। এ ছাড়া আরও কিছু নথিপত্রেও দেখা যায়, পাঁচ হাজার বছর আগে চীনের কিংবদন্তীর হলুদ সম্রাট বা রাজা হুয়াংতির স্ত্রী সি লিং শিকে বলা হয় রেশম বা সিল্কের আবিষ্কর্তা।
সম্রাজ্ঞী সি লিং শির আরেক নাম লেইচু। তিনি কী করে সিল্কের কথা জানতে পারেন, তা নিয়ে প্রচলিত আছে মজার একটি গল্প। এক দিন বিকেলে একটি পাত্রে চা পান করছিলেন সম্রাজ্ঞী লেইচু। এ সময় তার চায়ে উড়ে এসে পড়ে একটি রেশমপোকার গুটি। গরম পানিতে গুটিটা পড়তেই সেটার ভেতরকার জৈবিক উপাদানগুলো ভেঙে চায়ের ভেতর ছড়াতে থাকে একটি পাতলা তন্তু। লেইচু তন্তুটি হাতে নিয়েই বুঝতে পারেন, এটি যেন তেন কিছু নয়। এরপর এমন আরও কিছু গুটি বা কোকুন সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করেন তিনি। সূক্ষ্ম ওই তন্তুটাকে পেঁচিয়ে রাখার জন্য বিশেষ একটি যন্ত্রও বানান তিনি। ওটাই হলো বিশ্বের প্রথম সিল্ক রিল। বা রেশম সুতা পেঁচানোর যন্ত্র।