চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-৪৫
স্থানীয় চা কারিগরের মতে, কুংফু চায়ের শিল্প দক্ষিণ চীনের ছাওশান অঞ্চল থেকে উদ্ভূত চা তৈরি এবং পরিবেশনের একটি শৈলীগত পদ্ধতি।
দক্ষিণ চীনের কুয়াংতং প্রদেশের ছাওশান অঞ্চলটি কুংফু চায়ের জন্য বিখ্যাত, যেখানে ওলং চা পাতা, চমৎকার পাত্র এবং বিশেষ চা তৈরির পদ্ধতির ব্যবহার রয়েছে।
স্থানীয় লোকেরা প্রায়শই বলে থাকেন তাদের শহরে চালের দোকানের চেয়ে বেশি চায়ের দোকান রয়েছে, তাদের দৈনন্দিন জীবনকে চা থেকে আলাদা করা যায় না। যেখানেই ছাওশানের মানুষ, সেখানেই কুংফু চায়ের প্রচলন।
এই চা সংস্কৃতি সম্পর্কে কুংফু চা শিল্পের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রাদেশিক উত্তরাধিকারী ছাং হুইফেং জানান,
‘ছাওশানের লোকদের চা সংস্কৃতির অসাধারণ সাধনা এবং উন্নত দক্ষতা রয়েছে। এটি কুং ফু চা সংস্কৃতির সংজ্ঞা। এটি ছাওশানের মানুষের জীবনধারা। আমরা এটিকে 'চা ভাত' বলি, কারণ এটি খাবারের মতো আমাদের জন্য অপরিহার্য’।
অতীতে শানথৌ বন্দর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিপুল পরিমাণ চা রপ্তানি হতো বলে জানান ছাং হুইফেং।
২০০৯ সালের অক্টোবরে, কুংফু চা শিল্পকলা কুয়াংতোংয়ের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্বকারী আইটেমগুলোর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মেডোগ কাউন্টির ক্যলিং গ্রামটি বেশ কয়েক বছর আগে চা চাষ শুরু করার পর থেকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে।
দুর্গম ভূখণ্ড এবং ঘন বনের কারণে গ্রামটি একসময় দুর্গম ছিল। ২০১৩ সালে মেডোগ হাইওয়ে খোলার ফলে সংযোগের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুযোগ উন্মুক্ত করেছে।
এখানকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ চা বাগানকে কেন্দ্র করে একটি পর্যবেক্ষণ প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের মাধ্যমে পর্যটনের বিকাশের দিকেও নজর দিয়েছে।
চীনের ঐতিহ্যবাহী চা উৎপাদন, পরিবেশন ও পানের রীতি ২০২২ সালে ইউনেস্কোর অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান করে নেয়। এর আগে ২০০৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ চা-পান শিল্পের ঐতিহ্যগত ও অর্থনৈতিক মূল্যকে বিবেচনায় নিয়ে ২১ মে’কে আন্তর্জাতিক চা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়।