চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য-২৭
তাকে ঘিরে একটি গল্প রয়েছে। একবার ওয়াং চিহুয়ান তার সতীর্থ কবি কাও শি এবং ওয়াং ছাংলিংয়ের সঙ্গে পানশালায় যান। সে যুগে একটা প্রথা ছিল যে, পানশালায় সন্ধ্যায় পেশাদার বিনোদনকারীরা বিভিন্ন কবির কবিতা গান গেয়ে পরিবেশন করতেন। তিন কবি একটা প্রতিযোগিতায় নামেন। তারা দেখতে চান কার কবিতা পেশাদার শিল্পীরা বেশি পরিবেশন করেন।
সন্ধ্যার শুরুতে একজন শিল্পী ওয়াং ছাংলিংয়ের একটি কবিতা গেয়ে শোনান। কিছুক্ষণ পর আরেকজন শিল্পী কাও শির কবিতা শোলেন। এরপর আবার ওয়াং ছাংলিংয়ের দুটি কবিতা গাওয়া হলো। এভাবে চলতে লাগলো। কিন্তু ওয়াং চিহুয়ানের একটি কবিতাও গাওয়া হলো না।
ওয়াং চিহুয়ান যখন ভীষণ হতাশ, তখন মঞ্চে উঠলেন সবচেয়ে সুন্দরী এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় শিল্পী। তিনিই ছিলেন ওই পানশালার সেরা আকর্ষণ। তিনি পরিবেশন করলেন ওয়াং চিহুয়ানের কবিতা। ওই কবিতাটির নাম ‘সীমানা ছাড়িয়ে।’
পরবর্তিকালে ওয়াং চিহুয়ানের যে দুটি কবিতাকে মাস্টারপিস বা সেরা কীর্তি বলা হয় তার মধ্যে এ কবিতাটি রয়েছে। কবিতাটি ‘আউট অব দ্য গ্রেট ওয়াল’ ‘ বিয়ন্ড দ্য বর্ডার’ এমনি বিভিন্ন নামে ইউরোপে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তার সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতা হলো ‘স্টর্ক টাওয়ারের উপরে’ বা সারস মিনারের উপরে।
কবিতাটি চার লাইনের। চার লাইনের এবং প্রতিটি লাইনে পাঁচটি ক্যারেকটার বা শব্দ। প্রতিটি লাইনে অন্ত্যমিল আছে। তিনি ছোট ছোট এমন অনেক চতুর্পদী লিখেছিলেন। কিন্তু তার ছয়টি কবিতা শেষ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গেছে।
শ্রোতাদের শোনাচ্ছি কবি ওয়াং চিহুয়ানের সেরা সৃষ্টি সারস মিনারের উপরে
সূর্য অভিবাদন করে পর্বতের প্রতি
সাগরের দিকে বয় হোয়াংহোর গতি
সুন্দর দৃশ্য দেখতে হলে পরে
উঠতেই হবে যে অনেক উপরে।
কবি ওয়াং চিহুয়ান ছোট ছোট এমন জ্ঞানগর্ভ কবিতার জন্য চিরায়ত চীনা সাহিত্যে অমরত্ব পেয়েছেন।
---------------------------------------------------------------------------
প্রতিবেদন ও কণ্ঠ: রওজায়ে জাবিদা ঐশী, মাহমুদ হাশিম, শান্তা মারিয়া
অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম
সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।