মানুষ ও প্রকৃতি ৯
১৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে স্থাপিত পার্কটি মানুষ ও বাঘের মধ্যে আবহমান কাল ধরে চলে আসা দ্বন্দ্বও কমাতে পেরেছে। শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে অনেক বছর আগেই। বনায়ন হয়েছে নতুন করে। চলছে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতিতে জন্ম নেয়া বাঘ শাবককেও প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে বন্য অবস্থায় টিকে থাকার জন্য।
রাশিয়ার দূর প্রাচ্য এবং উত্তর পশ্চিম চীনে মূলত বাস করে আমুর টাইগার ও লেপার্ড যারা বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। আমুর টাইগারের আরেক নাম সাইবেরিয়ান টাইগার।
শীতল সাইবেরিয়ান অরণ্যের ফ্ল্যাগশিপ স্পিসিস এই বাঘ। এখানকার অরণ্যের ইকোসিস্টেমের প্রধান সদস্যও সাইবেরিয়ান টাইগার। ১৯৯৮ সালে মাত্র ১২ থেকে ১৬টি বাঘ ছিল এই এলাকায়।
মানুষ ও বাঘের মধ্যে যে আবাস ভূমি ও অন্যান্য কারণে স্মরণাতীত কাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে তা কমিয়ে আনা হয়েছে চীনে। ফলে বাড়ানো সম্ভব হয়েছে বাঘ ও চিতার সংখ্যা।
ন্যাশনাল ফরেস্ট্রি অ্যান্ড গ্রাসল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ফেলিন রিসার্চ সেন্টারের ডেপুটি ডিরেকটর এবং নর্থইস্ট ফরেস্ট্রি ইউনিভারসিটির অধ্যাপক চিয়াং কুয়াংশুন জানান, ২০০০ সালে চীনে মাত্র ১০টি সাইবেরিয়ান টাইগার ছিল। তারা বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল এবং শুধুমাত্র চীন ও রাশিয়ার সীমান্তে ছিল। গত দুই দশকে অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। নর্থ ইস্ট চায়না টাইগার অ্যান্ড লেপার্ড ন্যাশনাল পার্কে মা বাঘ ও ছানাদের দেখা পাওয়া কোন বিরল ঘটনা নয়। অনেক বাঘ পরিবার এখানে রয়েছে। বিশেষ করে গত দুই বছরে অনেক মা এবং শাবকের দেখা পাওয়া যাচ্ছে ।
সম্প্রতি ১৪তম বিশ্ব বাঘ দিবস পালন করা হয়। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি, বাঘের আবাসভূমি সংরক্ষণ, বাঘকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গণ সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২০১০ সাল থেকে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।