দেহঘড়ি পর্ব-০৩৭
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে ট্যাডিশনাল চাইনিজ মেডিসিন বা টিসিএম নিয়ে আলোচনা ‘ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসাধারা’, চীনের হাসপাতাল-পরিচিতি ‘চিকিৎসার খোঁজ’ এবং টিসিএম ভেষজের উপকারিতা নিয়ে আলোচনা ‘ভেষজের গুণ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
জেনে নিন হামের টিসিএম চিকিৎসা
হাম একটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে ও তীব্র ভাইরাসঘটিত রোগ। রুবিলা নামেও এটি পরিচিত। মর্বিলিভাইরাসের অন্তর্গত একটি ভাইরাসের কারণে রোগটি হয়ে থাকে। ভাইরাসটির পূর্ণ বৈজ্ঞানিক নাম মিজল্স মর্বিলিভাইরাস। এ ভাইরাসটি প্রথমে শ্বাসনালিতে সংক্রমণ ঘটায়, তারপর রক্তের মাধ্যমে দেহের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাসটির ২৪টি ধরন আবিস্কৃত হয়েছে, তবে বর্তমানে মাত্র ৬টি ধরন দেখা যায়। মানুষ ছাড়া অন্য কোনও প্রাণীর হাম হয় না।
হামের লক্ষণ: হাম হলে প্রথমে জ্বর হয় এবং শরীর ম্যাজ ম্যাজ করে বা হালকা ব্যথা লাগে। প্রথম এক-দুই দিন তীব্র জ্বরও হতে পারে; চোখ-মুখ ফুলে উঠতে পারে; চোখ লাল হয়ে যেতে পারে; চোখ দিয়ে পানি পড়তে পারে; নাক দিয়ে পানি ঝরতে পারে এবং হাঁচি হতে পারে। এ রোগ হলে শরীরে র্যাশ বা ছোট ছোট লালচে গুটি বা ফুসকুড়ি দেখা দেয়, যা সাধারণত দ্রুতই সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
হাম সাধারণত শিশুদের হয়। এ রোগ হলে শিশুরা কিছুই খেতে চায় না এবং ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ে। পূর্ণবয়স্কদেরও হাম হতে পারে। হামের প্রতিষেধক হিসেবে ‘এমএমআর’ টিকা দেওয়া হয়। এ টিকা দেওয়া না থাকলে হাম হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণত একবার হাম হলে দ্বিতীয়বার আর এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
চিরাচরিত চীনা চিকিৎসা তত্ত্ব বা টিসিএমে মনে করা হয়, হাম, মাম্পস বা চিকেন পক্স ভ্রূণের বিষের কারণে হয়, যা গর্ভধারণের সময় শিশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে কিংবা গর্ভাবস্থায় বিকশিত হয়। এই বিষাক্ত পদার্থগুলো সুপ্ত থাকে যতক্ষণ না শিশুটি একটি বাহ্যিক রোগজীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। বাহ্যিক রোগজীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার পর বিষাক্ত পদার্থগুলো শরীরের উপরিভাগে প্রকাশিত হয় এবং ফুসকুড়ি বা ফোস্কা দেখা দেয়। বিষাক্ত পদার্থগুলোর কারণে শরীরের ‘ইয়াং’ বা তাপশক্তি বেড়ে যায়।