দেহঘড়ি পর্ব-১০০
‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে প্রাকৃতিক উপায়ে রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময় নিয়ে আলোচনা ‘ভালো থাকার আছে উপায়’, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং ’মৌসুমী স্বাস্থ্য পরামর্শ’।
#ঐতিহ্যবাহী_ চিকিৎসাধারা
বন্ধ্যাত্বের টিসিএম দাওয়াই
ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি বা টিসিএম-এ বলা হয় ‘বন্ধ্যাত্ব’ বলে কিছু নেই। এর কারণ হলো টিসিএম ভারসাম্যের একটি তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং কারোর গর্ভধারণের অক্ষমতাকে একটি ভারসাম্যহীনতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। গর্ভধারণের জন্য এই ভারসাম্যহীনতা দূর করা প্রয়োজন হয়, বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা নয়। সাধারণত টিসিএম চিকিৎসকরা শরীরের মূল ভারসাম্যহীনতার চিকিত্সা করেন এবং এর ফলে শরীরের লক্ষণগুলোর উপশম হয়। এই চিকিৎসাব্যবস্থা অন্য যে কোনও অবস্থার ক্ষেত্রে যতটা প্রযোজ্য, ততটা প্রযোজ্য প্রজনন ক্ষেত্রেও। একজন নারীর স্বাভাবিক ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা হলো তার মাসিক শুরু হওয়ার সময় থেকে রজঃনিবৃত্তি শুরু হওয়ার সময় পর্যন্ত ‘সম্ভাব্য গর্ভধারণ’ অবস্থায় থাকা। টিসিএম তত্ত্ব মতে, এই অবস্থার কোনও বিচ্যুতি কোনও না কোনও ভারসাম্যহীনতা; ‘বন্ধ্যাত্ব’ নয়। এর সহজ অর্থ হলো কোনও ব্যক্তিরি সর্বোত্তম প্রজনন স্বাস্থ্য থেকে বিচ্যুতি। টিসিএম দর্শনে মনে করা হয়, একটি সুস্থ গর্ভাবস্থা এবং সুস্থ শিশু পেতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিশুর মা ও বাবার শরীর যথাসম্ভব সুস্থ রাখা। টিসিএম টিকিৎসকরা একটি স্বতন্ত্র চিকিত্সা পদ্ধতির বিস্তৃত প্রর্ণালী ব্যবহার করেন, যা মূলত একটি আলাদা ডায়গনস্টিক ব্যবস্থা, ভেষজ সূত্র, আকুপাংচার পয়েন্টের উদ্দীপনা, শারীরিক কাজ, খাদ্যতালিকা, জীবনযাত্রা ইত্যাদির সমন্বয়। ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতাকে শক্তিশালী ও ভারসাম্যপূর্ণ করার মাধ্যমে প্রজননক্ষমতা বাড়ায় এবং এ প্রজননক্ষমতার জন্য অপরিহার্য হরমোন উৎপাদন করে। উপরন্তু, প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় করা এবং সহানুভূতিশীল স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করার মাধ্যমে চীনা ভেষজ এবং আকুপাংচার মন ও শরীরে গভীর শিথিলতা পুনরুদ্ধার করে প্রজনন প্রক্রিয়াকে চাঙ্গা করে।