দেহঘড়ি পর্ব-৭৩
যক্ষ্মা বিশ্বের ১০টি প্রধান মরণব্যাধির একটি। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যক্ষ্মা একটি ব্যাক্টেরিয়াবাহিত রোগ। শ্বাসযন্ত্রে মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে এ রোগ হয়। করোনাভাইরাসের মতো এ ব্যাক্টেরিয়াও বাতাসে ভেসে বেড়ানো ড্রপলেটের মধ্যে দিয়ে শরীরে সংক্রমিত হয়। একজনের হাঁচি-কাশি থেকে দ্রুত এটি অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। যক্ষ্মা রোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে রয়েছে বেশ নানা ভ্রান্ত ধারণা। আজ আমরা আলোচনা করবো এমন কয়েকটি ভুল ধারণা সম্পর্কে।
যক্ষ্মা কি কেবল ফুসফুস সংক্রমিত করে?
যক্ষা কেবল ফুসফুসকে সংক্রমিত করে না; শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক, হাড় ও মেরুদণ্ডেও এ ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে লক্ষণ এবং উপসর্গ ভিন্ন হয়। ফুসফুসের বাইরে যে যক্ষ্মা হয় তাকে এক্সট্রাপালমোনারি টিউবারকিউলোসিস বলা হয়।
যক্ষ্মা কি ছোঁয়াছে?
সব যক্ষা ছোঁয়াছে নয়। কেবল ফুসফুস কিংবা শ্বাসনালি যে যক্ষায় আক্রান্ত হয়, সেটি একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে শরীরের অন্য অঙ্গে সংক্রমণ হলে সে রোগী থেকে যক্ষা অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। তাই যক্ষ্মা মানেই ছোঁয়াচে রোগ নয়।
যক্ষ্মা কি জিনবাহিত রোগ?
অনেকের ধারণা, যক্ষ্মা একটি জিনবাহিত রোগ। প্রকৃতপক্ষে তা নয়। এ রোগের বিস্তারের ক্ষেত্রেও জিনের কোনও ভূমিকা নেই। এ ব্যাক্টেরিয়া যে কোনও সময় যে কাউকে সংক্রমিত করতে পারে। বাবা-মায়ের যক্ষ্মা হলেই সন্তনের মধ্যে যক্ষ্মা রোগের সম্ভাবনা বাড়ে, এমন তথ্যের পক্ষেও কোনও রকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি।