দেহঘড়ি পর্ব-২৩-China Radio International
কেটি চেন বলছিলেন, 'গেল ২৯ মে বাংলাদেশের একটি হসপিটালে আমি টিকা নিয়েছি। টিকা নেয়ার পর কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া অনুভব করিনি। দ্রুতই কাজে ফিরেছি। তবে টিকা নেয়ার পরও বাইরে বের হলেই আমি এখনো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি।‘
ছবি: কেটি চেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনা নাগরিক
আরেকজন চীনা নাগরিক স্কাই। তিনি জানান, টিকা নেওয়ার পর কিছুটা ক্লান্তি অনুভব হয়েছে তার। একদিন বিশ্রাম নিয়ে কাজে ফিরেছেন তিনি। যারা সামনে টিকা নেবেন তাদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন স্কাই।
তিনি বলেন, ‘যারা টিকা নেবেন তাদের জন্য তিনটি পরামর্শ, টিকা নেয়ার আগে শরীরের বিশ্রাম প্রয়োজন। তাই কয়েকদিন আগে থেকেই পর্যাপ্ত ঘুমাবেন । টিকা নেয়ার পর বেশি করে পানি পান করুন। এসময় ভারী কোনো কাজ না করে সম্ভব হলে ২ দিন বিশ্রাম নিন।'
অভি/রহমান
## ভালো থাকার আছে উপায়
দূর করুন ইউরিক অ্যাসিডের জ্বালা
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এক জটিল সমস্যা। এটা বেড়ে গেলে স্ফটিক আকারে দেহের বিভিন্ন অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টে জমতে থাকে। এর ফলে গেঁটে বাত, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিতে পাথর জমার মতো সমস্যা হতে পারে; এমনকি কিডনি অকেজোও হয়ে যেতে পারে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাত্রার কারণে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবে শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হল পূর্ণবয়স্ক পুরুষের ক্ষেত্রে ৩.৪–৮ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার এবং পূর্ণবয়স্ক মহিলার ক্ষেত্রে: ২.৪–৬.০ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার।
পিউরিনের বিপাকীয় বিভাজন থেকে ইউরিক অ্যাসিড সৃষ্টি হয়। মূলত পিউরিনসমৃদ্ধ খাদ্য থেকে দেহের যকৃতে ইউরিক অ্যাসিড উৎপন্ন হয়ে রক্তে মিশে যায় এবং রক্তের মাধ্যমে বাহিত হয়ে কিডনিতে পৌছায়। কিডনি প্রস্রাবের মাধ্যমে এটি দেহ থেকে বের করে দেয়। যখন কিডনি অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বের করে দিতে পারে না তখন জটিলতা সৃষ্টি হয়। রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে তাকে হাইপার ইউরেসিমিয়া বলে।
শরীরে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখার সবচেয়ে ভাল উপায় হলো পিউরিনসমৃদ্ধ খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া এবং যেসব খাবার অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে সেগুলো খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা। এর পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও দরকারী। আসুন আগে জেনে নেই বর্জনীয় খাদ্যগুলো:
মাংস: যেসব খাবার খেলে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যায় রেড মিট বা লাল মাংস তাদের অন্যতম। লাল মাংসের মধ্যে রয়েছে গরুর মাংস, খাসির মাংস, ভেড়ার মাংস, মহিষের মাংস ও হরিণের মাংসের। এছাড়া সাদা মাংস যেমন মুরগীর মাংসেও ইউরিক অ্যাসিড বেশি থাকে তবে লাল মাংসের তুলনায় কম। সুতরাং যাদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বেশি তারা লাল মাংস একদম পরিহার করুন এবং সাদা মাংস পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করুন।
অর্গান মিট: লাল মাংসের মতো অর্গান মিট যেমন মগজ, যকৃত, কলিজা, জিহবা, কিডনি ও ভুঁড়িতে ইউরিনের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। দেহে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন এগুলো।
পাখির মাংস: মুরগি, হাঁস, কবুতর, কোয়েল পাখি বা অন্যান্য পাখির মাংসের মতো সাদা মাংসে উচ্চ মাত্রায় পিউরিন থাকে। ইউরিক অ্যাসিড কমাতে এগুলোও বাদ দিতে হবে খাদ্যতালিকা থেকে।
পিচ্ছিল সবজি: ঢ্যাঁড়স, কচুর লতি, কচুর মুখী, পুঁইশাকের মতো সবজিও রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ায়। তাই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ঠিক রাখতে এগুলো বাদ দিতে হবে। এছাড়া ফুলকপি, মাশরুম, পালংশাক, শিম, মটরশুঁটি, বেগুনও খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে অথবা অল্প পরিমাণে গ্রহণ করতে হবে।
সামুদ্রিক মাছ: যেকোনো ধরনের মাছে পিউরিনের পরিমাণ বেশি থাকে। তবে সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, মাছের ডিম ইত্যাদিতে এ পরিমাণ আরও বেশি। সেকারণে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়তি থাকলে এসব খাবার একেবারেই বাদ দেওয়া উচিৎ।
ইস্ট দিয়ে তৈরি খাবার: যেসব খাবার তৈরিতে ইস্ট ব্যবহার করা হয় যেমন পাউরুটি, নান রুটি, বিয়ার ইত্যাদি রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ানোর জন্য দায়ী। তাই ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্যই খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এগুলো। সব ধরনের ডাল ও ডালের তৈরি খাবার যেমন পিঁয়াজু, বেগুনি, ফুচকা, চটপটি, খিচুরি এসবও পরিহার করতে হবে।
মিষ্টি ফল: ফ্রুক্টোজ বেশি এমন ফল রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ার জন্য দায়ী। সেকারণে খেজুর, আতা, বেদানা, কাঁঠাল, আঙুর, নাশপাতি, পীচ, আম, তাল, চেরী ও কিউই ফল খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।
বেভারেজ ও মিষ্টি খাবার: পেপসি ও কোকের মতো কোমল পানীয় এবং অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন কেক, মিষ্টি, ফলের রস, মধু, গুড় এবং চিনি ও গুড়ের তৈরি খাবারের কারণে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড বাড়ে। ফলে বাদ দিন এসব খাবার।
বাদাম, বীচি জাতীয় খাবার: ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাদ দিতে হবে শিমের বীচি, কাঁঠালের বীচি এবং বিভিন্ন ধরনের বাদামও। - রহমান
## আপনার ডাক্তার
আজ আমরা কথা বলেছি ডিম্বাশয়ের চকলেট সিস্ট নিয়ে। চকলেট সিস্ট একরনের এন্ডোমেট্রিয়াল সিস্ট। এটা দেখতে চকলেটের মতো হয় বলে এর নামকরণ হয়েছে চকলেট সিস্ট। মাসিকের সময় জরায়ুর বাইরের এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যুগুলো ছিঁড়ে যায়। এ সময় অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ হয়। এই রক্ত ডিম্বাশয়ের ভেতরে জমে সিস্ট বা পুঁজকোষ তৈরি হয়। ৩০-৪৫ বছর বয়সী নারীদের এই সিস্ট হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে কম বয়সী মেয়েদেরও এটা হতে পারে। এ ছাড়া যাঁদের সন্তান হয়নি বা বন্ধ্যাত্ব রয়েছে কিংবা যাদের প্রথম সন্তান নিতে দেরি হয়েছে, তাঁদেরও এ সমস্যা হতে পারে। বংশগতভাবেও সমস্যাটি হতে পারে। চকলেট সিস্ট হলে ধীরে ধীরে ডিম্বাশয়ের টিস্যু নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে অনেকের ক্ষেত্রেই গর্ভধারণে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রেহানা আক্তার। ডাক্তার রেহানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের কনসাল্ট্যান্ট এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের জরায়ু-মুখ ও স্তন ক্যান্সার নির্ণয় কেন্দ্রের উপ-প্রকল্প পরিচালক।
‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।