রোগের জম কালোজাম-China Radio International
কালোজাম একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মৌসুমী ফল। গ্রীষ্মকাল অর্থাৎ জুন, জুলাই ও অগাস্ট মাসে এশিয়াজুড়ে পাওয়া যায় এই ফল। ভিটামিন ও খনিজ পদার্থসমৃদ্ধ জামের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। এ ফলের রঙ বেগুনি কালো এবং স্বাদ বেশিরভাগ মিষ্টি ও সামান্য টক।
ফল ছাড়াও এর বীজ, গাছের পাতা ও ছালের রয়েছে ঔষধি মূল্য। বিভিন্ন রোগের আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসায় বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও চীনসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে জাম ব্যবহৃত হয়। এই ফলে ক্যালোরি খুব কম, তবে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, জিংক, কপার, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুকটোজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্যালিসাইলেটসহ বেশ কতগুলো উপাদান, যা বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যের উপকার করে। জানিয়ে দিচ্ছি জামের স্বাস্থ্য-উপকারিতা।
সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে: জামে ম্যালিক এসিড (malic acid), গ্যালিক এসিড (galic acid), অক্সালিক এসিড (oxalic acid) এবং ট্যানিনসের (tannins) মতো যৌগ রয়েছে, যেগুলো ব্যাক্টেরিয়া, ম্যালেরিয়া, অন্ত্রের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং নানা ধরনের সংক্রমণ থেকে শরীরকে মুক্ত রাখে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে: ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে খুবই উপকারী জাম। ঐতিহ্যগতভাবেই এই ফল ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। জামের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (glycemic index) কম হওয়ায় এটি ডায়াবেটিসের জন্য ভালো বলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রমাণিত। মেডিকেল জার্নাল কমপ্লিমেন্টারি থেরাপিস ইন মেডিসিন-এ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, জামে বেশ ভালো ডায়াবেটিক-বিরোধী গুণ রয়েছে। আরেক গবেষণায় দেখা যায়, জামের বীজ ৩০ শতাংশের বেশি রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: জামে অ্যালজিনিক এসিড (alginic acid) বা এলাজিটেনিন (ellagitannins), অ্যান্থোসায়ানিন (anthocyanins) ও অ্যান্থোসায়ানিডিন (anthocyanidins) থাকে, যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এসব উপাদান রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কোলেস্টেরলের জারণ রোধ করে এবং হৃদরোগ সৃষ্টিকারী প্লাক গঠনে বাধা দেয়। এছাড়া জামে থাকে প্রচুর পরিমান পটাসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকির কমায়।