চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর ইইউ’র অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ
উদাহরণস্বরূপ, ভিয়েনায় সকালের যাতায়াতে মূলত জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত যান ব্যবহার করা হয়। এখন, যারা সবুজ ভ্রমণের বিকল্প বেছে নিয়েছেন, তাঁরাও যদি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার ছেড়ে দেন, তাহলে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটবে।
কেউ কেউ বলছেন, ইউরোপের অটো শিল্পকে রক্ষার জন্য এ ধরনের শুল্ক আরোপ প্রয়োজন। অন্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, এই ব্যবস্থা বৈদ্যুতিক গাড়িকে আরও ব্যয়বহুল করে তুলবে এবং ইউরোপের জলবায়ুসংশ্লিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের পথ কঠিনতর করবে।
বস্তুত, "ভোগের খরচ" ছাড়াও, ইইউ-র উচিত "পরিবেশগত খরচ" সাবধানে হিসেব করা। ইউরোপের সর্বস্তরের মানুষ বিশ্বাস করে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে, চীনের বৈদ্যুতিক যানবাহন ও অন্যান্য শিল্পের বড় আকারের উন্নয়ন প্রযুক্তির খরচ কমাতে এবং পরিষ্কার শক্তিপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রয়োগ বাড়াতে সাহায্য করছে। চীন জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া ও সবুজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রেখেছে ও রাখছে। আর চীনা বৈদ্যুতিক যানবাহনের ওপর অস্থায়ী শুল্ক আরোপ ইইউর নিজস্ব সবুজ রূপান্তর ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
ইইউ বারবার বিশ্বকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কার্বন-নিরপেক্ষতা অর্জনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। অথচ, চীনের বৈদ্যুতিক যানবাহন শিল্প কেবল চীনকে তার নিজস্ব নির্গমন হ্রাসের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে সহায়তা করে না, ইইউতে রফতানিকৃত বৈদ্যুতিক যানবাহনগুলো ইইউ-র কার্বন নির্গমন হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এখন ইইউ সবুজ উন্নয়নের কথাও বলছে, আবার বাণিজ্যে সংরক্ষণবাদের চেতনাও অনুসরণ করছে। এ ধরনের "দ্বৈতনীতি" ইইউ’র বিশ্বব্যাপী বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, এবং বৈশ্বিক সবুজ রূপান্তর-প্রক্রিয়াকে বাধা দেবে। তাই, চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি ইইউ’র উচিত পুনর্বিবেচনা করা।