এআই-এর বৈশ্বিক উন্নয়ন—সহযোগিতা নাকি বিচ্ছিন্নতা?
মার্কিন দৃষ্টিভঙ্গি আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে এবং বিশ্বব্যাপী এআই-এর ন্যায্য প্রতিযোগিতার পরিবেশ দুর্বল করতে পারে। এই পদ্ধতিটি শুধুমাত্র বিদেশি গ্রাহকদের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করবে না, বরং আন্তর্জাতিক অবিশ্বাস এবং বিভাজন বাড়িয়ে তুলতে পারে। যা টিমওয়ার্কের নীতির বিপরীত চেতনা। একই সঙ্গে তা জাতিসংঘের খসড়া প্রস্তাবে সমন্বিত প্রতিক্রিয়ার বিপরীত চেতনা হতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েন বিন বলেছেন যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ও পরিচালনা গোটা মানবজাতির ভাগ্যের সাথে জড়িত। এজন্য "বিচ্ছন্নতা" এবং "প্রযুক্তির ওপরে বেড়া এবং দেয়াল দিয়ে লুকিয়ে রাখার" পদ্ধতি অবলম্বন করার পরিবর্তে বিশ্বব্যাপী যৌথ প্রচেষ্টার প্রয়োজন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের উদ্দেশ্যমূলক আইনকে সম্মান করা, বাজার অর্থনীতি ও ন্যায্য প্রতিযোগিতার নীতিকে আন্তরিকভাবে সম্মান করা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার খাতে আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করার জন্য ভাল পরিস্থিতি তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য, যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণে এআই খাতের উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিময়ের মাধ্যমে উন্নত এআই প্রযুক্তি ও জ্ঞান অর্জন করতে হবে। মার্কিন পন্থা বাস্তবায়িত হলে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর কোম্পানি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলি আরও বিধিনিষেধ ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে। যার ফলে বৈশ্বিক সম্পদ এবং বাজারের সম্পূর্ণ সুবিধা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
সংক্ষেপে, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব এআই সম্পর্কিত জাতিসংঘের খসড়া প্রস্তাবের চেতনার বিপরীত এবং এআই ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা ও উন্নয়নের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত একটি ন্যায্য, স্বচ্ছ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক এআই শাসনকাঠামো প্রতিষ্ঠার জন্য একযোগে কাজ করা। যাতে সব দেশ এআই প্রযুক্তির গবেষণা বিকাশ ও প্রয়োগে সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে এবং এআই-এর সুযোগ-সুবিধা যৌথভাবে ভাগ করে নিতে পারে। শুধুমাত্র এভাবেই আমরা এআই প্রযুক্তির সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করতে পারি এবং গোটা মানবজাতির মঙ্গল ও অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পারি।