আসলে কতটা সত্য ‘চীনা ঋণের ফাঁদ’?
তারপর দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় চীনের চরিত্র আমি তুলে ধরছি। অধিকাংশ প্রকল্পে চীনের কোন শেয়ার নেই এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে আসছে চীন। ঋণ দেয়ার চুক্তিতে থাকে না কোন রাজনৈতিক শর্ত। ঋণের পরিমাণ ও চুক্তির বিষয়বস্তু দুপক্ষের আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হয়। অন্যদিকে, বাংলাদেশের অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নের সবচেয়ে ভাল প্রবণতা বজায় রাখছে। বাংলাদেশের সব ঋণের মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ চীন থেকে আসে এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ গড়ে ৩১ বছর। তাই ঋণ পরিশোধ বাংলাদেশকে আর্থিক চাপে ফেলবে না। বাংলাদেশকে মাঝারি আয়ের দেশ হতে চাইলে বিদেশী বিনিয়োগ প্রয়োজন এবং চীন এমন একটি বিশ্বাসযোগ্য বিনিয়োগকারী ও অংশীদার।
গত মার্চ মাসে সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনও ‘চীনা ঋণের ফাঁদ’ ধারণাকে খণ্ডন করেছেন। তিনি বলেছেন, চীন একটি বন্ধুপ্রতিম দেশ এবং আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। অনেক মানুষ ভুল একটি ধারণা পোষণ করেন যে বাংলাদেশ চীনা ঋণের ফাঁদে পড়তে পারে, তা ঠিক নয়। বাংলাদেশের ঋণ মূলত আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে আসে। এমনকি সবচেয়ে বড় ঋণদাতা দেশ চীন নয়- জাপান। তাই আমি মনে করি, এ বিষয়ে আর আলোচনার দরকার নেই।
সিএনএনের সাংবাদিক কেন এমন প্রশ্ন করেন? তা আমরা সবাই বুঝি। যারা সবচেয়ে বেশি চীনা ঋণের ফাঁদের কথা বলেন - তারা চীনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কুসংস্কার লালন করেন। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের কথা আবার প্রমাণ করেছে যে শতবার একটি মিথ্যা বলা হলেও – তা কখনোই সত্য হবে না। চীন ও বাংলাদেশের সহযোগিতার ওপর এটি কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না এবং ফেলা উচিতও নয়।
অবশেষে আমি বলতে চাই, গত ৫ মে বাংলাদেশে চীনা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য পরামর্শদাতা সং ইয়াংও ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। তাতে তিনি বলেছেন, চীন ও বাংলাদেশের সহযোগিতা ‘সৌভাগ্য’ বয়ে এনেছে। চীনা ঋণের সহায়তা প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার ও মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে এনেছে এবং দু দেশের মৈত্রী এসব প্রকল্পের মাধ্যমে আরও জোরদার হয়েছে।