১০ কোটি শরণার্থীর দুর্বিষহ জীবনের দায় কার?
বিশ্ব শরণার্থী সমস্যা সৃষ্টিকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত দায় নেয়া। তবে দেশটি বরাবরই তার দায় অস্বীকার করে; এমনকি এ সমস্যা সমাধানে কোনো দায়িত্বও পালন করে না। এনবিসি জানায়, গত বছরের আগস্ট মাসে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় থেকে ৪৬ হাজার আফগান শরণার্থীর আবেদনপত্র যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিভাগে জমা পড়েছে। গত ২ জুন পর্যন্ত, কেবল ২৯৭টি আবেদন অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সংঘাতে ঘি ঢেলে দেওয়ার পর রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত চরম হয়েছে। তাতে কয়েক মিলিয়ন ইউক্রেনীয় নাগরিক স্বদেশ ত্যাগ করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকটের মুখে কেবল ১ লাখ শরণার্থী গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ প্রতিশ্রুতিও পালন করেনি যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের বরাতে রয়টার্স জানায়, গত জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্র কেবল ৫১৪ জন ইউক্রেনীয় শরণার্থীকে গ্রহণ করেছে এবং মার্চ মাসে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ১২ জন।
ট্রাম্প সরকারের সময় যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ১৫ হাজার শরণার্থী গ্রহণ করেছে। বাইডেন সরকার শরণার্থী গ্রহণের সীমা উন্নত করে ২০২২ সালে ১ লাখ ২৫ হাজার নির্ধারণ করেছে। তবে এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র কেবল ৮,৭৫৮ জন শরণার্থী গ্রহণ করেছে। প্রতিটি সংখ্যার পিছনে রয়েছেন একজন করে জীবিত মানুষ। তারা নিজেদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। তারা শান্তির দরজার বাইরে রয়েছেন। তবে তারা চান একদিন শান্তির আলো তাদের আলোকিত করবে। জাতিসংঘের শরণার্থী-বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ গ্র্যান্ডি বলেন, “শরণার্থী সংকট সমাধান করতে চাইলে একমাত্র উপায় হচ্ছে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। যার ফলে নিরীহ মানুষ গুরুতর দেশীয় সংকট ও ঝুঁকিপূর্ণ পালানোর পথের মধ্যে জুয়া খেলবে না”।
যুক্তরাষ্ট্র শরণার্থী সমস্যা সমাধান করবে বলে আমরা মনে করি না। তবে দেশটি আর যুদ্ধ ও সংঘাত চালাবে না বলে আমরা আশা করি। কেবল এটুকু করলেই শরণার্থী সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র বৃহত্তম অবদান রেখেছে বলে আমরা ধরে নেব।