‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বাংলাদেশের উন্নয়ন-স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করছে
অর্থের দিক থেকে, চীনের আর্থিক সহায়তার কোনো অযৌক্তিক শর্ত নেই। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জি মিং সম্প্রতি বাংলাদেশের মিডিয়াতে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে লিখেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন একবার বলেছিলেন, উন্নয়ন অংশীদারির কাছ থেকে বাংলাদেশ আরও বেশি অর্থ চায়, তবে দুঃখের ব্যাপার হল, এসব অর্থ দিতে অনেক শর্ত পূরণ করতে হয়, এর ফলে অর্থ সংগ্রহ করা অনেক কঠিন হয়। তবে চীনের ঋণের কোনো পূর্বশর্ত নেই। বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে চীন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে না, সচ্ছল আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করে। ‘দি ডিপ্লোম্যাট’ ম্যাগাজিন জানায়, চীনের দেওয়া ঋণের গড়পড়তা সুদ শুধু মাত্র ১.২৩ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময় ৩১ বছর, আর অতিরিক্ত ৮ বছর সময় নেওয়া যেতে পারে। চীন কখনই শুধু নিজের স্বার্থ বিবেচনা করে না, বরং বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে পুঁজি বিনিয়োগ করে, যাতে যৌথ উন্নয়ন বাস্তবায়ন করা যায়।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর কথা অনুযায়ী বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশ উভয় উন্নয়ন ও পুনরুত্থানের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। চীনা জাতির মহান পুনরুত্থানের চীনা স্বপ্ন এবং ‘সোনার বাংলাদেশের’ স্বপ্নের অনেক মিল আছে। চীন ও বাংলাদেশ বাস্তব সহযোগিতা সম্প্রসারণ করছে, দু’দেশের বিনিময় আরও ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, মৈত্রী আরও মজবুত হচ্ছে। এর মাধ্যমে জনগণের মৈত্রী আরও দৃঢ় হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির শুরুতে বাংলাদেশ চীনের অবস্থা দেখে দ্রুত সাহায্য দিয়েছে, বাংলাদেশ প্রচুর পরিমাণ চিকিৎসাসামগ্রী সংগ্রহ করে চীনে পাঠিয়েছে। আর যখন বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের মহামারি দেখা দেয়, চীন তখন বাংলাদেশে দ্রুত চিকিত্সক বিশেষজ্ঞদল পাঠিয়েছে। বাংলাদেশে প্রথম সনাক্ত রোগী দেখা দেয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ, আর জুন মাসে চীন বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে। যা ছিল বাংলাদেশের একমাত্র বিদেশি চিকিত্সক বিশেষজ্ঞদল। এ ছাড়া আরও বিপুল পরিমাণ চিকিত্সা সামগ্রী ও টিকা দিয়েছে চীন। চীন বাংলাদেশকে মহামারি প্রতিরোধে যথাসাধ্য সহযোগিতা করেছে। এ থেকেও বোঝা যায়, চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি বেশ দৃঢ়। বাংলাদেশ হলো দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের সঙ্গে টিকা উত্পাদন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরকারী একমাত্র দেশ। মহামারি আরও বাড়লে সবাই দেখবে যে, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে চীনের প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম দিয়ে করোনাভাইরাসের টিকা উত্পাদন করছে।