প্রিয় পথিক
সুপ্রিয় শ্রোতা, আপনারা শুনছেন বেইজিং থেকে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠান। এখন শুনবেন ‘তোমার জন্য গান’, আপনাদের সঙ্গে আছি আমি মুক্তা।
বন্ধুরা, শুনছিলেন ‘প্রিয় পথিক’ শীর্ষক গান। প্রাচীন চীনা কবিতা, সভ্যতা ও রীতিনীতি আজও সমসাময়িক চীনা জনগণের জীবনকে প্রভাবিত করে চলেছে। আধুনিক চীনারা প্রাচীনকালের কবিতা দিয়ে সংগীত রচনা করছেন। আজকের অনুষ্ঠানে আমি আপনাদেরকে এ ধরণের কয়েকটি সংগীত শোনাবো। প্রথমে শোনাবো ‘নিরলস সাধনা’ শীর্ষক গান। চীনের তুয়ানউ উত্সব (চান্দ্রপঞ্জিকার পঞ্চম মাসের পঞ্চম দিন) কবি ছু ইউয়ানকে স্মরণের জন্য নিবেদিত একটি উত্সব। ছু ইউয়ান (৩৪০-২৭৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) ছিলেন যুদ্ধরত রাজ্য যুগে ছু রাজ্যের দেশপ্রেমিক কবি। তিনি তুয়ানউ উত্সবের এ দিনে নদীতে ঝাপিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। নিজের দেশকে ভিন্ন দেশ কর্তৃক আক্রান্ত হতে দেখে তাঁর হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। চীনের বিখ্যাত্ কন্ঠশিল্পী কং লিন নানের কন্ঠে এ গানের কথা রচিত হয়েছে ছু ইউয়ানের কবিতা ‘লিসাও’ অবলম্বনে। ‘লিসাও’ উপস্থাপিত ‘ছুছি’ (ছু সংগীত) চীনা রোমান্টিক কবিতার উত্স।
বন্ধুরা, শুনছিলেন ‘নিরলস সাধন’ শীর্ষক গান। এখন আমি আপনাদেরকে ‘সু বাঁধে বসন্তের ভোর’ শীর্ষক গান শোনাবো। চীনের একটি প্রবাদ এমন: ‘উপরে স্বর্গ এবং নিচে সুচৌ ও হাংচৌ’। এ প্রবাদে পৃথিবীর দুটি স্থানকে স্বর্গের সাথে তুলনা করা হয়েছে। প্রতিবছরের বসন্তে হাংচৌয়ের পশ্চিম হ্রদের তীরে, প্রায় তিন কিলোমিটার লম্বা সু বাঁধে, উইলো ও পীচের মতো শোভাময় গাছপালা রঙিন হয়; কোনো কোনো গাছে ফুল ফোটে। সবমিলিয়ে এক আশ্চর্য সুন্দর দৃশ্য! এ দৃশ্য অসংখ্য পর্যটককে এখানে টেনে আনে। বসন্তের এ সুন্দর দৃশ্য ফুটে উঠেছে চীনের প্রাচীনকালের বিখ্যাত কবি সু তং ফো’র কবিতায়। সু তং ফো ছিলেন হাংচৌ-র একজন স্থানীয় কর্মকর্তা। তিনি পশ্চিম হ্রদের ড্রেজিংয়ের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই হ্রদের কাদা ও ঘাসের স্তূপ থেকে একটি বাঁধ সৃষ্টি করা হয়। এখানকার সুন্দর দৃশ্য বিভিন্ন সময়ে শিল্পীর তুলিতে ফুটে উঠেছে, কখনও সংগীতে হয়েছে বর্ণিত, অথবা কবিতায় পেয়েছে স্থান। চলুন, আমরা গানটি শুনবো।