বয়স্কদের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করার গুণ (১)
অনুষ্ঠানে আমরা পালাক্রমে সিনচিয়াং ও সিচাং-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আশা করি, এর মাধ্যমে শ্রোতারা চীনের সুন্দর সিনচিয়াং ও সুন্দর সিচাং সম্পর্কে আরও ভালো ধারণা পাচ্ছেন। তাহলে দেরি না করে শুরু করি আমাদের আজকের অনুষ্ঠান। আজকে আমরা সিনচিয়াং নিয়ে কথা বলব।
কাজাখদের মধ্যে একটি গল্প প্রচলিত আছে: বহুকাল আগে, একজন রাজা মনে করতেন যে, মানুষ বৃদ্ধ হয়ে গেলে অকেজো হয়ে যায়। তাই তিনি আদেশ জারি করেছিলেন যে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী কোনো বয়স্ক ব্যক্তি থাকলে, পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে অবশ্যই বৃদ্ধ ব্যক্তিকে বনে ফেলে রেখে আসতে হবে। এই আইনের অন্যথা হলে মৃত্যুদণ্ড। তো, এক যুবক তার বৃদ্ধ বাবাকে বনে রেখে আসার বিষয়টি কিছুতেই সহ্য করতে পারছিল না। তাই, সে তার বাবাকে একটি বড় কাঠের বাক্সে লুকিয়ে রেখেছিল। একদিন, যুবকটিকে রাজা একটি অভিযানে যাওয়ার জন্য ডেকে পাঠান। তিনি একটি বলদের পিঠে বাবাসমেত সেই কাঠের বাক্সটি নিয়ে রওয়ানা দেন। অভিযাত্রী দল যখন মরুভূমিতে এলো, তখন তাদের পানি ফুরিয়ে গেল এবং রাজা খুবই উদ্বিগ্ন হলেন। তিনি আদেশ করলেন: যে পানি খুঁজে পাবে তাকে প্রচুর পুরস্কার দেওয়া হবে। যুবকটি তার বাবাকে গোপনে বিষয়টি জানায়। বাবা তার ছেলেকে বললেন, বাক্সটি গরুর পিঠ থেকে নামিয়ে সেটিকে ছেড়ে দিতে ও তাকে অনুসরণ করতে। দেখা গেল মুক্ত গরু ঠিকই পানির সন্ধান পেয়ে গেল। কয়েকদিন পর দলটি একটি বড় হ্রদের কাছে এল। রাজা পানিতে একটি চকচকে আলো দেখতে পেলেন। তিনি সন্দেহ করলেন যে, পানিতে রত্ন আছে এবং আদেশ দিলেন: যে কেউ রত্ন খুঁজে পাবে, সে আমার মন্ত্রী হতে পারবে। যুবকটি তার বাবাকে আবারও বিষয়টি গোপনে বলল। পিতা তাকে রত্নটি কীভাবে খুঁজে বের করতে হবে তা জানালেন। কিন্তু রত্নটি খুঁজে পাওয়ার আগে তার ছেলেকে রাজার কাছে দুটি শর্ত দিতে বললেন: প্রথমত, রাজার আদেশ অমান্য করার জন্য যুবককে শাস্তি দেওয়া যাবে না, এবং দ্বিতীয়ত, রাজাকে বয়স্কদের নির্বাসনে পাঠানোর নিয়ম বাতিল করতে হবে। রাজা যুবকের শর্তে রাজি হলেন এবং যুবকটি রত্নটি খুঁজে পেয়ে রাজাকে দিল। রাজা তখন বয়স্ক ব্যক্তিদের নির্বাসনে পাঠানোর নিয়ম বাতিল করলেন এবং যুবকের বৃদ্ধ পিতার কাছে ক্ষমা চাইলেন। সেই থেকে ‘একজন ৬০ বছর বয়সী ব্যক্তি বুদ্ধিমান’—এমন কথা কাজাখদের মধ্যে প্রচলিত আছে।