চীনে প্রবেশের ৩০ বছর পর হলিউড মুভির আকর্ষণ কেন হ্রাস পাচ্ছে?
আমেরিকান ফিল্ম রিসার্চ এবং কনসালটিং সংস্থা আর্টিসেংওয়ের প্রধান ল্যান্স বো উল্লেখ করেছেন যে, অনেক জনপ্রিয় চীনা চলচ্চিত্র বাস্তব গল্প বা সাধারণ মানুষের জীবন থেকে অভিযোজিত হয় এবং দর্শকদের সাথে সহজেই অনুরণিত হতে পারে। তিনি মনে করেন, চীনে সাম্প্রতিক অপরাধ বা সাসপেন্স বিষয়ক চলচ্চিত্রের উত্থান অপ্রত্যাশিত এবং বুদ্ধিদীপ্ত বর্ণনার বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা দর্শকদের সিনেমা দেখার আগ্রহকে উদ্দীপিত করেছে। বিপরীতে, হলিউডের অনেক সিক্যুয়াল সিনেমা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনুমানযোগ্য হয়ে ওঠে।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, চীনা চলচ্চিত্র অধ্যয়ন করা বিশেষজ্ঞ স্ট্যানলি রোজেন মনে করেন, চীনা চলচ্চিত্র এবং হলিউড চলচ্চিত্রের মধ্যে ব্যবধান দিন দিন কমে আসছে। চীনের চলচ্চিত্র শিল্প প্রথমে হলিউডকে শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করে, তারপর চীনের বাজারের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হলিউডকে পরাজিত করেছে।
তা ছাড়া, চীনা চলচ্চিত্রের বিকাশ এবং বৃদ্ধি চীনা দর্শকদের স্বদেশের সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের স্বীকৃতিকে প্রতিফলিত করে। ইউএস ‘ন্যাশনাল রিভিউ ম্যাগাজিন’ জানায় যে, চীনের চলচ্চিত্র শিল্প অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, সাংস্কৃতিক পার্থক্য আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
কিছু আমেরিকান মিডিয়া চীনকে তথাকথিত ‘জাতীয়তাবাদ’ এবং ‘দেশপ্রেম’ পরিবেশনে অভিযুক্ত করার জন্য রঙিন চশমা এবং দ্বৈত মানদণ্ড ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। একদিকে, তারা অসহায় বোধ করে যে, হলিউড ক্রমবর্ধমানভাবে লাভজনক চীনা বাজার হারাচ্ছে, তবে তাদের এটাও স্বীকার করতে হবে যে, চীনা চলচ্চিত্র শিল্প আরও উচ্চমানের চলচ্চিত্র তৈরি করছে যা দেশীয় দর্শকদের সাথে অনুরণিত হয়। আমেরিকান সাংস্কৃতিক কলামিস্ট স্টিফেন কেন্ট যেমন বলেছেন, ‘চীন সক্রিয়ভাবে তার সাংস্কৃতিক আখ্যানকে রূপ দিতে এবং তার জনগণকে একত্রিত করতে চাইছে।’
আমেরিকান গণমাধ্যম উল্লেখ করেছে যে, চীন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিদেশী বাজার হয়ে থাকবে, যা ভবিষ্যতে হলিউডকে ছেড়ে দেওয়া কঠিন হবে, তবে হলিউডকে এই বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হওয়ার জন্য তার মানসিকতা এবং কৌশলগুলোকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হতে পারে। তবে হলিউডের চীনা বাজারে ‘অসামান্য’ এই পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি করা কঠিন হতে পারে বলে মার্কিন গণমাধ্যম মনে করে।