মহাকাশে প্রথম চলচ্চিত্র ‘দ্য চ্যালেঞ্জ’
মাত্র দুই জন নিয়ে গঠিত অতি ছোট দলের একজন সদস্য হিসেবে পেরেসিল্ডকে নিজেই নিজের মেকআপ করতে হয়েছিল। কারণ মহাকাশে ওজনহীনতা রয়েছে, তিনি প্রতিটি প্রসাধনী পণ্যের পিছনে আঠালো হুক স্থাপন করেছিলেন, যাতে বোতল এবং জারগুলো ভাসতে না পারে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের কেবিনে জানালা দিয়ে বাইরের মহাকাশের বিশালতা দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু খুব কম লোকই হয়তো জানেন যে, ওই দৃশ্যের দিকে তাকানোও ঝুঁকিপূর্ণ। বেইজিংয়ে চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ারের পর পেরেসিল্ড স্মরণ করেন যে, তারা রাশিয়ান কেবিনের জানালা দিয়ে দেখেছিলেন যে, পৃথিবী এবং সূর্য একে অন্যের ওপর প্রায় লেপ্টে যাচ্ছে, প্রান্তে শুধু একটি পাতলা নীল রেখা রয়েছে।
দৃশ্যটি অত্যন্ত সুন্দর ছিল এবং পরিচালক সেই দৃশ্য ধারন করার করতে চান। কিন্তু তিনি জানালার পাশে হেলান দিয়ে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে রোদে পুড়ে যান। কারণ মহাকাশে পৃথিবীর ওজোন স্তরের কোন সুরক্ষা নেই, মহাকাশে অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণ খুবই শক্তিশালী।
আরো উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো ‘দ্য চ্যালেঞ্জ’ সিনেমার সদস্যদের এই অসাধারণ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তারা টম ক্রুজ এবং হলিউডের আগে মহাকাশে একটি সিনেমা দৃশ্যায়ন করার কৃতিত্ব অর্জন করেন। ২০২০ সালের প্রথম দিকে এমন খবর ছিল যে, টম ক্রুজ এবং পরিচালক ডগ লিমান ইলন মাস্কের স্পেসএক্স প্রকল্পটির সাহায্যে মহাকাশে চলচ্চিত্রের শ্যুটিং করবেন। কিন্তু ওই পরিকল্পনাটি এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। তবে রাশিয়ান ক্রুরা মহাকাশ থেকে ফিরে আসার পর টম ক্রুজ পরিচালক শিপেনকোকে ফোন করে মহাকাশে শ্যুটিং করার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়েছিলেন।
গত বছরের নভেম্বর মাসে পরিচালক শিপেনকো সিয়ামেনে ২০২৩ সালে চায়না গোল্ডেন রোস্টার অ্যান্ড হান্ড্রেড ফ্লাওয়ার ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল চালাকালে চীনে এসেছিলেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে তিনি চীনের গ্রেটওয়াল দেখেছেন এবং দিনে কয়েকবার দেখতে পেয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটি ২৪ ঘন্টায় ১৬ বার পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে এবং ১৬টি সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের অভিজ্ঞতা লাভ করে। তাই পরিচালক প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর সকলের চেয়ে দ্রুতগতিতে পৃথিবীর চারপাশে ‘ভ্রমণ’ করেন এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো দেখতে পান।
লিলি/হাশিম