প্রতিবন্ধী দাবাড়ু সিয়ে হাইথাও
যদি জীবনকে দাবার সঙ্গে তুলনা করা হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে খারাপ সূচনা হয়েছিল একটি বিরল রোগে আক্রান্ত সিয়ে হাইথাওয়ের।
২০০০ সালে জন্মগ্রহণকারী হাইথাও ১ বছর বয়সে স্পাইনাল মাসল অ্যাট্রোফি (এসএমএ) বা মেরুদণ্ডের পেশীর ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হন। এটি একটি বিরল বংশগত রোগ। চীনে নবজাতকদের ৬ হাজার থেকে ১০ হাজারের মধ্যে ১ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়। এসএমএ এখনও একটি দুরারোগ্য এক ব্যাধি। এ রোগ উপশম এবং শরীরের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধারে দীর্ঘমেয়াদী ও মানসম্মত চিকিত্সা প্রয়োজন।
নিজের রোগ প্রসঙ্গে হাইথাও বলেন, “প্রথমে শুধু হোঁচট খেতাম। তারপর ধীরে ধীরে হাঁটার সক্ষমতা হারাই। ওষুধ ও কিছু পুনর্বাসন প্রশিক্ষণ ছাড়া অন্য কোনও বিশেষ ভাল চিকিত্সার ব্যবস্থা সেই সময়ে ছিল না। অসুস্থ হওয়ার পর আমার মা তাঁর চাকরি ছেড়ে বাড়িতে আমাকে দেখাশোনা করেছিলেন। সেই সময়ে আমার মায়ের জন্য এটি অবশ্যই একটি খুব কঠিন কাজ ছিল। আমার বাবা-মাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাত চাই। তাদের জন্য এটি সহজ ছিল না।”
২০১৬ সালের আগে বিশ্বের কোনও দেশ এসএমএ চিকিৎসায় কোনও লক্ষ্যযুক্ত ওষুধ তৈরি করতে পারেনি এবং রোগ নিয়ন্ত্রণে তখনকার ‘রক্ষণশীল চিকিত্সা’ তেমন কার্যকর ছিলো না।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাইথাওর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে। রোগের কারণে পেশীর ক্ষয় ও দুর্বলতা তাকে ধীরে ধীরে হুইলচেয়ারে আবদ্ধ করে ফেলে এবং তিনি যে কাজগুলো স্বাধীনভাবে করতে পারতেন, তা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ে।
মানুষ বলে থাকে যে, ঈশ্বর যখন আপনার জন্য একটি দরজা বন্ধ করে দেন, তখন আপনার জন্য আরেকটি জানালা খুলেও দেন।
২০০৮ সালে, একটি ‘গো’ আগ্রহের ক্লাস চালু হয় এবং হাইথাও প্রথমবার দেখেই ‘গো’র প্রেমে পড়ে যান। তিনি বলেন, “এতে আমি বুঝতে করি, ‘গো’ এমন একটি খেলা, যেখানে সক্ষম শারীরিক মানুষের সাথে সমানভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যায়”