পাখির খাঁচা শিল্পী ছেন ল্য ছাই
ছেন ল্য ছাই নিজের প্রিয় পাখির জন্য খাঁচা তৈরি করতে প্রায় দুই বছর ব্যয় করেছিলেন। তিনি যখন এই পাখির খাঁচাটির কথা উল্লেখ করছিলেন, তখন তিনি হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন। এটি তার প্রিয় শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে তিনি মনে করেন। ছেন ল্য ছাই বলেন, “সাধারণ পাখির খাঁচায় কেবল একটি স্তর থাকে। তবে পাখির লাফ দেওয়ার অভ্যাস বিবেচনায় নিয়ে, তাকে বাস করার আরও বিশাল জায়গা দেওয়ার জন্য একটি ‘ছোট অ্যাটিক’ ডিজাইন করে তৈরি করেছিলাম।”
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাখির খাঁচার শিল্পে পতন দেখা যাচ্ছে। এখন অনেক নিয়মিত গ্রাহক এবং পুরনো পাখিপালক বন্ধু তাকে পাখির খাঁচা মেরামত করতে বলেন। তার কাজের গুরুত্ব পাখির খাঁচা তৈরি থেকে পাখির খাঁচা মেরামতের দিকে পরিবর্তিত হয়েছে।
ছেন ল্য ছাই বলেন, বাঁশের চটা ভেঙ্গে যায় কিংবা এর রং নষ্ট হয়। প্রতিটি পাখির খাঁচার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মাত্রা আলাদা। মেরামত প্রক্রিয়ায় ছেন ল্য ছাই প্রথমে খাঁচা প্রস্তুতকারকের কারুশিল্পের থিম বোঝার চেষ্টা করেন এবং তারপরে তিনি তার কারুকার্য অনুসরণ করে এটিকে মেরামত করেন। মেরামত প্রক্রিয়ায় তিনি বিভিন্ন মাস্টারের খাঁচা তৈরির শৈলী দেখতে পারেন। তিনি মনে করেন, নিজের স্টাইলে মেরামত করলে পাখির খাঁচাটি তার সৌন্দর্য হারাবে।
২০১৪ সালে পাখির খাঁচা তৈরির দক্ষতা হংকংয়ের অবৈষয়িক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকার ‘ঐতিহ্যগত হস্তশিল্প’ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয়। পাখির খাঁচা তৈরির দক্ষতা অনেক তরুণ-তরুণীকে আকৃষ্ট করেছে। ছেন ল্য ছাই বলেন, খাঁচা তৈরির জন্য ধৈর্য ও সংকল্প প্রয়োজন। তিনি অনেক দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং এসব দক্ষতা নিজের শিষ্যদের শেখাতে চান। তিনি চান না, এই হস্তশিল্প অদৃশ্য হয়ে যাক। যদি কারোর শেখার অবিচল ইচ্ছা থাকে, তাহলে তিনি অবশ্যই তাদের শেখাবেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছেন ল্য ছাই পর্যায়ক্রমে ৮ জন শিক্ষানবিশ নিয়েছেন এবং তারা ডিজাইন, ফাইনান্স ও নৃত্যসহ বিভিন্ন মহল থেকে এসেছেন।
নৃত্যশিল্প থেকে আসা ছেন ল্য ছাইয়ের একজন শিক্ষানবিশ হ্য চিয়া লু বলেন, “অতীতে হংকং সিনেমায় প্রায়ই পাখির খাঁচা দেখা যেত। এখন আমি খাঁচা তৈরি করার সুযোগ পেয়ে খুব খুশি।”
হ্য চিয়া লু বলেন, “আমার আশপাশের অনেক লোক মনে করেন, পাখির খাঁচা এমন একটি বিষয়, যার প্রতি আগ্রহ থাকবে কেবল বাবা-মা বা কিংবা দাদা-দাদির প্রজন্মের মানুষের। তারা বুঝতে পারেন না, কেন আমি শিখতে চাই। আমি সত্যিই শিখতে শুরু করার পর পাখির খাঁচা তৈরির প্রতিটি প্রক্রিয়া বুঝতে পারি। প্রতিটি পাখির খাঁচাকে শূন্য থেকে গড়ে উঠতে দেখতে পারি। এমন কৃতিত্বের অনুভূতির মতো আর কিছুই নেই।’