বাংলা

অটিস্টিক ছেলের জন্য রেলগাড়ি তৈরি করলেন চীনা বাবা

CMGPublished: 2023-06-29 15:11:22
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

ট্রেনটি চালানোর জন্য তিনি সঠিক আকার না পাওয়া পর্যন্ত বার বার একে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার চেষ্টা করেছেন। ট্রেনটি মুভ করতে পারার পর এর চালিকাশক্তিতে সমস্যা দেখা দেয়। এর উপাদানগুলো উচ্চ চাপ প্রতিরোধ করতে না পারায় ট্রেনটি দুই মিটার দূরে গিয়ে থেমে যায়।

ট্রেন তৈরির জটিল প্রক্রিয়া এবং এই প্রক্রিয়ায় উদ্ভূত নানা কঠিন সমস্যা ছাড়াও তাকে অন্যদের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। গ্রামবাসীরা ‘তোমার মাথা কি ঠিক আছে? নিজেই ট্রেন তৈরি করা সত্যিই একটি কল্পনাবিলাস নয় কি? এ ধরণের প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতো তাকে। লি চিয়া ওয়েই স্বীকার করেন, এসবের মুখে একাধিক বার তিনি হাল ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ-অবধি তা তিনি করেননি।

যথেষ্ট খোলা জায়গায় ট্রেনটি চালানোর জন্য লি চিয়াং ওয়েই তার বাসা শহরাঞ্চল থেকে উপকণ্ঠ এলাকায় স্থানান্তরিত করেন। ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের শেষ দিক পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে অবশেষে লি চিয়া ওয়েই রেলগাড়ি তৈরি করেন। এবং এটি ঝামেলামুক্ত ড্রাইভিং অর্জন করেছে। প্রতিবার যখন তিনি হাল ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করেছেন, তখনই তিনি তার ছেলের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতির কথা মনে করেছেন।

তিনি তার জীবনের সবচেয়ে অর্থপূর্ণ জিনিস হিসেবে তার পরিবারের সাথে মানসম্পন্ন সময় কাটানোকে বেছে নিয়েছেন। ট্রেনটি তৈরি করা হলো এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের এটি উপায় মাত্র।

ট্রেনটি তৈরি করার প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া হলো ছেলে হাং হাংকে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা করার পদ্ধতি।

যখন লি চিয়া ওয়েই ট্রেন তৈরি করা শুরু করেন, তখন থেকে বাবা কী করছেন - তাতে মনোযোগ দিতে শুরু করে হাং হাং।

ট্রেন তৈরি আস্তে আস্তে সম্পন্ন হলে ছেলের অসুস্থতাও দিন দিন কমতে থাকে। এই প্রক্রিয়ায় হাং হাং অন্যদের সঙ্গে বিনিময় করতে আর ভয় পায় না। ট্রেনের গঠন প্রসঙ্গে তার জানাশোনাও বেড়েছে।

এই ট্রেন প্রসঙ্গে লি চিয়া ওয়েই বলেন, ‘খুব ছোট এবং সুন্দর না হলেও আমার মনে এর সুন্দর একটি অবস্থান আছে।’

এটি বিশ্বের সবচেয়ে ছোট্ট ট্রেন হতে পারে, তবে এটি অবশ্যই পিতামাতার সবচেয়ে বেশি ভালবাসা বহন করা ট্রেন।

ট্রেন তৈরি’র এ আট বছর তিনি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খুব আনন্দময় ও অর্থপূর্ণ সময় অতিবাহিত করেছেন।

ট্রেন তৈরি শেষ করার পর হাং হাং এর প্রথম যাত্রী এবং চালক হয়। গ্রামবাসীরা আকৃষ্ট হয়ে ট্রেন দেখতে আসেন। এই ট্রেন স্থানীয় একটি পর্যটন প্রকল্পে রাখা হয়। হাং হাংয়ের চালানো এই ট্রেনটি ২০ ও ৩০ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম এবং এ থেকে উপার্জিত টাকায় হাং হাংয়ের বেতন হয়। প্রতিদিন ছোট চালক হিসেবে পার্কে সে অনেকের সঙ্গে কথা বলে, মত বিনিময় করে এবং গোটা সমাজের সঙ্গেও যোগাযোগ করে হাং হাং। তা দেখে লি চিয়া ওয়েই মনে করেন, ট্রেন তৈরিতে ব্যয় করা তার আট বছর সময় সার্থক হয়েছে।

লিলি/এনাম

首页上一页12 2

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn