বিয়ের ছবির পিছনের গল্প
অবসর ভাতা এবং শাকসবজি ও বর্জ্য পণ্য বিক্রির সামান্য আয়ের উপর নির্ভর করে থাং ছাই ইং ও তার স্বামী তাদের নিজেদের সন্তান এবং ছয়টি পরিত্যক্ত শিশুর যত্ন নিয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
শিশুরা একের পর এক স্কুলে যাওয়ার বয়সে পৌঁছানোর সাথে সাথে থাং ছাই ইংয়ের আর্থিক চাপও বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০০১ সালে এ খবর জানার পর ফেন ই দমকল বিভাগ চাং চিয়া কাংয়ের শিক্ষার জন্য অর্থদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ছুটির দিনে বা উৎসবের সময় অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা পুনর্মিলনী নৈশভোজের জন্য চাং চিয়া কাং এবং দাদিকে আমন্ত্রণ জানায়।
গত দশ বছরে অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা অনেক পরিবর্তন দেখেছেন, কিন্তু চাং চিয়া কাং-এর জন্য দমকল বিভাগের সমর্থন কখনও বন্ধ হয়নি।
চাং চিয়া কাং বলেন, তিনি যা শুনেছেন এবং দেখেছেন – তা তার হৃদয়ে একটি স্বপ্নের বীজ বপন করেছে। ২০১৬ সালে চাং চিয়া কাং সেনাবাহিনীতে যোগদান করার বাছাই পর্বে অংশ নিয়ে তার ইচ্ছামতো একজন অগ্নিনির্বাপক হয়েছেন।
এই কাজটি তার কল্পনার চেয়েও কঠিন এবং ভারী। কিন্তু চাং চিয়া কাং কখনোই অনুতাপ করেন নি। তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে অন্যদের সাহায্য করতে পারা আমাকে একটি দুর্দান্ত কৃতিত্বের অনুভূতি এনে দেয়। এই পেশার মাধ্যমে আমি আমাকে লালনকারী সমাজকে প্রতিদান দিতে চাই। দাদি আমাকে দ্বিতীয় জীবন দিয়েছেন। এবং অন্য যারা আমাকে সাহায্য করেছিলেন তারা আমাকে তৃতীয় জীবন দিয়েছেন।’
২০১৯ সালে চাং চিয়া কাংয়ের বড় বোন অর্থাৎ থাং ছাই ইংয়ের জৈবিক কন্যা বিয়ে করেন। তার স্বামীও একজন দমকলকর্মী। কাজের ব্যস্ততার কারণে বড় বোন এবং স্বামী বিয়ের ছবি তোলার সময় পান নি।
চাং চিয়া কাং মনে রাখেন যে দাদা-দাদিও তাদের বিয়ের ছবি তোলেন নি। দাদির তরুণ বয়সের সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চাং চিয়া কাং তার বার্ষিক ছুটিতে গোপনে দাদা-দাদিকে সারপ্রাইজ দেয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি দাদা-দাদিকে নিয়ে সুন্দর বিয়ের ছবি তোলার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ছবি তোলার সেই দিনে দাদার শরীর খারাপ হলে পুরো পরিকল্পনাটি ভেস্তে যায়। তাই চাং চিয়া কাং সেদিন দমকলকর্মীর ইউনিফর্ম পরে দাদির সঙ্গে ছবি তোলেন।
চাং চিয়া কাং বলেন, ‘আমার দাদি খুব চিকন হলেও তিনি অনেক কিছু বহন করেছেন। তার কাছে আমি অনেক কিছু শিখেছি।’
২০২০ সালে ফেন ই জেলার দমকল বাহিনী ‘চাং চিয়া কাং স্বেচ্ছাসেবক দল’ এবং লাভ ফাউন্ডেশন স্থাপন করেছে। চাং চিয়া কাং বলেন, ‘বর্তমান জীবন নিয়ে আমি খুব সন্তুষ্ট। আমার বড় ইচ্ছা হলো দাদিকে সব সময় সুস্থ থাকতে দেখা, যাতে আমি তার সাথে আরও বেশি সময় কাটাতে পারি।’
লিলি/এনাম