চীনের পরিবেশ রক্ষা-বিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র ‘দারিদ্রমুক্ত দেশ-দুই: একটি গুপ্তধন’
উদ্দেশ্য যতই ভালো হোক না কেন, বাস্তবতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। অবৈধ মাছ ধরার বিপুল মুনাফায় মাছ রক্ষার স্বেচ্ছাসেবকদের বিশাল হুমকি সৃষ্টি হয়। তারা মাছ রক্ষা করতে স্বেচ্ছায় কাজ করছে, এক বা দুইজনের বিরুদ্ধে নয়, বরং বন্য মাছ ধরার স্বার্থের পুরো চেইনের মানুষের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।
মাঝে মাঝে লিউ হোং অবৈধ চোরা-শিকারিদের ‘চোখের কাঁটা’ হিসাবে বিবেচিত হয়েছিলো। তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, গুজব ছড়ানো হয়েছে এবং তাকে মারধর করা হয়েছে।
কিছু লোক স্বেচ্ছাসেবক টহলের বৈধতা নিয়ে সন্দেহও প্রকাশ করেছেন। লিউ হোং বলেছেন: ‘অবৈধ এবং অপরাধমূলক কাজের মুখে যেকোনো নাগরিকের তাদের থামানোর অধিকার আছে।’
কিছু স্বেচ্ছাসেবক যারা মাছ রক্ষায় তার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল- তারা ভয়ে নিজেদের প্রত্যাহার করেছিল। তবে, তাদের বেশিরভাগই এ কাজে থেকে গেছে। দিনের বেলায় তারা সাধারণ মানুষ—যেমন, নিরাপত্তারক্ষী, জেলে এবং কৃষক। তবে, রাতে তারা মাছ সুরক্ষার সাহসী লোকে পরিণত হন।
যেহেতু ইয়াংজি নদীর বাস্তুসংস্থানের দিকে জনগণের মনোযোগ বেড়েছে, সেহেতু এই ব্যক্তিগত মাছ রক্ষার দলটি আরও বেশি সামাজিক সমর্থন পেয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চিয়াংচিন মৎস্য বিভাগ মাছ সুরক্ষার স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য দুর্ঘটনা বীমা ক্রয় করতে শুরু করেছে এবং মাছ সুরক্ষা নৌকাগুলোর তেল খরচের অংশও ফেরত দিয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক কাজে আরও বেশি তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেছে।
যদি স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে অর্থ অবদান রাখতে ইচ্ছুক কোনো ধনী লোক না থাকে, তাহলে কি পরিবেশ রক্ষার কাজ চলতে পারে? উত্তর হলো ‘হ্যাঁ’।
‘দারিদ্রমুক্ত দেশ-দুই: একটি গুপ্তধন’ শিরোনামে তথ্যচিত্রের ক্রুরা সিনচিয়াংয়ের থিয়েনশান পাহাড়ে গিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের অনুসরণ করে তুষার চিতার ছায়া খুঁজে পাওয়ার আশা পোষণ করেন।
এসব স্বেচ্ছাসেবক ‘হুয়াং ইয়ে সিন চিয়াং’ বা ‘মরুভূমি সিনচিয়াং’ গ্রুপের সদস্য। আগামী বছর এই গ্রুপ প্রতিষ্ঠার দশম বার্ষিকী পালিত হবে। প্রথমে এ গ্রুপের স্বেচ্ছাসেবকরা থিয়েনশান পর্বতমালায় বন্য প্রাণীদের বিতরণের অবস্থা তদন্তের জন্য চাঁদা দিয়ে কেনা শতাধিক ইনফ্রারেড ক্যামেরা খাড়া পাহাড়ের উপর রেখে ছিলেন।
এসব ক্যামেরা আকস্মিকভাবে বন্য তুষার চিতাবাঘের থাবার প্রিন্ট ধারণ করেছে। তুষার চিতাবাঘকে ‘তুষার পর্বতের রাজা’ বলা হয়। এরা আলপাইন বাস্তুতন্ত্রের শীর্ষ শিকারি এবং একটি অঞ্চলের পরিবেশগত ভারসাম্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।
এসব স্বেচ্ছাসেবকের সংগৃহীত ছবি ও ভিডিওয়ের মাধ্যমে জনগণ তুষার চিতাবাঘের শিকার করা, ঘুমিয়ে পড়া ও ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ পেয়েছেন।
কেউ কেউ বলেন, প্রকৃতি রক্ষার আদর্শ অবস্থা হলো সুরক্ষা। আর তা সমস্ত জনগণের ব্যাপার হয়ে উঠেছে। কেবল অনেক লোক এই কাজ করলেই এই কাজে অংশ নিতে আরও বেশি লোককে উত্সাহিত করা সম্ভব হবে।
‘দারিদ্রমুক্ত দেশ-দুই: একটি গুপ্তধন’ শিরোনামের প্রামাণ্যচিত্র প্রচারের সময় ছেন বে আর বলেন, ‘এই পৃথিবী শুধু উঁচু ভবন, কোল্ড নম্বর এবং ইলেকট্রনিক পণ্য নয়; পাহাড়, জল এবং প্রাণী, প্রকৃতি এবং মানুষ ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।’
লিলি/এনাম/রুবি