A Postman in Shangri-la-China Radio International
উত্তরে তিনি বলেন, চিঠি পেয়ে গ্রামবাসীদের হাসিমাখা মুখ তৈরি হয়। এই আনন্দই হলো তার এই কাজে অবিচল থাকার কারণ।
জনগণের সেবায় কষ্ট পাওয়া বা কত ক্লান্ত হওয়াকে তিনি কষ্ট মনে করেন না; এতে তিনি খুশি হন।
ওয়াং শুন ইয়াওয়ের মতো গ্রামের পোস্টম্যানরা নিজেদের কাজের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। ওয়াং শুন ইয়াওয়ের কাছে সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, তিনি বহু বছর ধরে বাইরে চলাফেরা করেছেন এবং স্ত্রী ও সন্তানকে খুব কম সময় দিয়েছেন। এজন্য তিনি পরিবারের সদস্যদের কাছে ক্ষমা চান, গ্রামীণ পোস্টম্যানের শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। তরুণ বয়সেই তিনি রিউম্যাটিজম, মৃগী ও পেট ব্যথাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ধারাবাহিক কাজের কারণে তার রোগের চিকিত্সা করার সময়ও ছিলো না।
ভালো খবর হলো ২০১৪ সালে মুলি জেলায় সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ হয়। ফলে আগের মতো ঘোড়া দিয়ে চিঠি বিতরণের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়।
২০১৭ সালে ওয়াং শুন ইয়াও আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরগ্রহণ করেন। আগে তার স্বপ্ন ছিল- মুলি জেলায় একদিন সড়ক নির্মাণ করা হবে। আমার মতো পোস্টম্যানরা গাড়ি চালিয়ে চিঠি বিতরণ করবে। তিনি নিজকে ঘোড়ায় চড়ে চিঠি বিতরণ করা সর্বশেষ পোস্টম্যান বলে আশা করেন।
এখন তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। ঘোড়া দিয়ে দূরবর্তী জেলায় চিঠি বিতরণ এখন ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। তিনি সেই ইতিহাসের একজন সাক্ষী। অবসরগ্রহণের মাত্র কয়েক বছর পর রোগাক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের ৩০ মে মারা যান তিনি। গ্রামীণ পোস্টম্যান হিসেবে টানা ৩২ বছর তিনি কাজ করেছেন। তিনি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩০০০ মিটার উঁচু বরফাবৃত মালভূমির পথে ২ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার অতিক্রম করেছেন। তার হাত থেকে একটি চিঠিও হারায় নি। তার কাজের যথার্থতার হার শতভাগ।
সময় বয়ে যায়। ঘোড়ার পিঠে চিঠি বহনের সড়ক ইতিহাস হয়ে যায়। তবে, আমাদের মনে রাখতে হবে, অসংখ্য গ্রামীণ পোস্টম্যান তাদের গোটা জীবন ধরে এক-একটি দীর্ঘ ও কষ্টকর সড়কে হেঁটেছেন। দেশ-জাতির আজকের উন্নয়নের পথে তারাই আমাদের এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। তাদের পরিশ্রমের ফলেই আমরা আজ উন্নত সময় পেয়েছি। তাদের কাজ সত্যিই সম্মানজনক।