A Postman in Shangri-la-China Radio International
দীর্ঘ যাত্রা বা যাত্রায় নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেন ওয়াং শুন ইয়াও। তিনি ভয় পান না। তার সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো একাকীত্ব। বহু বছর ধরে তালিয়াং পাহাড়ের এই রাস্তায় অসংখ্য বার যাতায়াত করেছেন তিনি। মাঝেমাঝে দু ও তিন দিনের মধ্যে তিনি একজনও মানুষ দেখতে পান নি। তার সঙ্গী শুধু সেই নীরব ঘোড়া। একাকী বোধ করলে তিনি একটু মদ পান করতেন। নিজেকে উত্সাহ দেওয়া ও শীতের তীব্রতা দূর করতো মদ। একা একা পাহাড়ি পথে তিনি গান গাইতে পছন্দ করতেন। পাহাড় ও ঘোড়া হলো তার বিশ্বস্ত দর্শক। প্রতি বছর তিনি ৮৪০০টিরও বেশি পত্রিকা, ৩৩০টিরও বেশি ম্যাগাজিন, ৮৪০টিরও বেশি চিঠি এবং ৬০০টিরও বেশি প্যাকেজ বিতরণ করতেন। তিনি বলতেন, পোস্টম্যান হিসেবে কাজ করা হলো জনগণকে সেবা করা। আমি এ কাজ না করলে কে করবে?
পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন ও যোগাযোগ-ব্যবস্থা অনেক অসুবিধাজনক। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলগুলো যেন পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন এলাকা। ওয়াং শুন ইয়াও বহিঃর্বিশ্বের সঙ্গে গ্রামবাসীদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠেন। পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে চিঠি ও প্যাকেজ বিতরণের পাশাপাশি তিনি গ্রামবাসীদের জন্য বাইরের দুনিয়ার খবর নিয়ে আসেন।
গ্রামবীসদের চোখে তিনি সাধারণ একজন পোস্টম্যানই নন, তিনি তাদের বিশ্বস্ত আত্মীয় ও বন্ধুর মতো।
আপনারা হয়তো কল্পনাও করতে পারবেন না যে, তার মতো সাধারণ একজন পোস্টম্যান গ্রামের উন্নয়নে কত গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছেন।
প্রতিবার তিনি অন্যান্য জেলা থেকে কিছু শস্যবীজ বয়ে নিয়ে আসেন। বাইরের জগতে যা ভালোভাবে বিক্রি করা যায়, তিনি সেসব বীজ বয়ে নিয়ে আসেন। মাঝেমাঝে তিনি বাইরে থেকে ভালো গুণগত মানসম্পন্ন বীজ নিয়ে আসেন, ফলে গ্রামবাসীদের আয়ও ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়।
কোনো কোনো লোক ওয়াং শুন ইয়াওকে জিজ্ঞাস করেন যে, কেন তিনি টানা বহু বছর ধরে পোস্টম্যান হিসেবে পাহাড়ে কাজ করেছেন?