জনগণের রাজনীতি: দেশের মানুষকে ভালোবাসুন, প্রতিভাবানদের মূল্যায়ন করুন
চীনের ৫০০০ বছরের ইতিহাস দেশের প্রতিটি রাজবংশের উত্থান-পতন এবং তখনকার শাসকশ্রেণী ও জনগণের মধ্যে সম্পর্কের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। ইতিহাস সাক্ষী, শাসকরা যখন জনগণকে তাদের হৃদয়ে স্থান দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাশাকে বিবেচনায় নিয়েছেন, কঠোর পরিশ্রম করেছেন, তখন সংশ্লিষ্ট রাজবংশ টিকে থেকেছে, সমৃদ্ধ হয়েছে। আর, যখন শাসকরা জনগণ থেকে দূরে সরে গেছে, তাদের অবহেলা করেছে, তাদের সাথে নিষ্ঠুর ও অনৈতিক আচরণ করেছে, তখন সংশ্লিষ্ট রাজবংশও পতনের ঝুঁকিতে পড়েছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পতন হয়েছেও।
ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে, প্রাচীন চীনা ঋষিরা জনগণের ভূমিকার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিতেন এবং বিশ্বাস করতেন যে, শাসকরা যখন জনগণকে ভালোবাসে, জনগণকে মূল্য দেয়, মানুষের উপকার করে, এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করে, তখনই তারা জনগণের সমর্থন লাভ করতে পারে।
জনগণ দেশের শক্তির ভিত্তি ও উত্স হিসাবে ভূমিকা পালন করে। সিউনজি একবার বলেছিলেন: একটি দেশের শাসক যদি দেশের জনগণকে ভালবাসতে বা তাদের উপকার করতে না-পারে, তখন সে জনগণের আনুগত্য ও ভালোবাসা আশা করতে পারে না। জনগণের মন যুগিয়ে না চললেও, তাঁরা শাসকদের সমর্থন করবে ও তাদের জন্য প্রাণ দিতে তৈরি থাকবে—এমনটা আশা করা বাতুলতা মাত্র। জনগণ আনুগত্য ও সেবা ছাড়া, দেশের সামরিক বাহিনী শক্তিশালী হতে পারে না। সামরিক বাহিনী শক্তিশালী না-হলে এবং প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী না-হলে, বিদেশী শত্রুদের আক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যাবে। শত্রুদের আক্রমণে দেশ ধ্বংস হবে না—এমনটাও ভাবা যায় না। অতএব, একজন শাসক যদি চায় তার দেশ স্থিতিশীল থাকুক, জনগণ শান্তিতে থাকুক, তবে জনগণের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হতে হবে। আপনি যদি চান আপনার মন্ত্রীরা নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করবে এবং জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকবে, তাহলে আপনার শাসনব্যবস্থা কতোটা ভালো তা আগে চিন্তা করতে হবে। আপনি যদি সুশাসন চান এবং দেশকে স্থিতিশীল করতে চান, তাহলে সবচেয়ে ভালো উপায় হল রাজনৈতিক বিষয়গুলো পরিচালনা জন্য সক্ষম ও নৈতিকতার দিক দিয়ে গুণী—এমন প্রতিভা সন্ধান করা। অতএব, সিউনজি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে: একটি দেশের রাজা, নিজের জনগণকে ভালোবাসার মাধ্যমে স্থিতিশীলতা অর্জন করতে পারেন এবং প্রতিভাবন মানুষকে নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। যদি তিনি এই দুই দিক দিয়ে সফল না-হতে পারেন, তবে দেশ অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে।