জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধিদলের চীন সফর
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)-র আমন্ত্রণে বাংলাদেশের একটি উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদল, গত ৯ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত, চীন সফর করে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং নদ-নদী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে চীনের সাথে সহযোগিতা জোরদার করা তাদের এবারের সফরের মূল উদ্দেশ্য।
১০ মে চীনে এডিবি’র কার্যালয়ে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধিদলের জন্য একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এডিবি, বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাংক (এআইআইবি)-র প্রতিনিধিরা, চীনের ইয়াংজি ও হুয়াংহ্য নদীর সার্বিক ও স্থিতিস্থাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি সংস্থা ও সমস্ত উন্নয়ন অংশীদারদের সাথে সমন্বয় ও সহযোগিতার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এসব অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা নিজের দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী উপযুক্ত বিকল্প পরিকল্পনা তৈরীর জন্য কিছু সহায়ক তথ্য পেতে পারেন।
জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত অন্যতম দেশ হিসেবে, বাংলাদেশের জন্য বন্যা ও নদ-নদীর ব্যবস্থাপনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সহযোগিতা খুব প্রয়োজন। চীনও গত কয়েক দশকে এ ক্ষেত্রে বেশকিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে; যেমন, ইয়াংজি নদী অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হুয়াংহ্য নদীর পরিবেশগত করিডার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে চীন। ইয়াংজি নদী অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ওয়াইআরইবি) চীনের জনসংখ্যার ৪০% এবং ৪০% মিঠা পানির সম্পদ রয়েছে। এটি ৪০০ মিলিয়ন মানুষকে পানীয় জল সরবরাহ করে এবং মোট মত্স্য উত্পাদনের ৬০% অবদান রাখে। এ অঞ্চল চীনের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রায় ৪৫% অবদান রাখে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলটি চীনের ভবিষ্যত অর্থনৈতিক উন্নয়নের তিনটি প্রধান চালিকাশক্তির অন্যতম। কিন্তু অর্থনৈতিক অঞ্চলের এখনও অনেক পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়। এ জন্য, চীন সরকার ২০১৬ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে, যা পরিবেশগত সুরক্ষা ও সবুজ উন্নয়নের জন্য পথপ্রদর্শক নীতিমালা নির্ধারণ করে। বাংলাদেশও চীনের মতো পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। দু’দেশের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা জোরদার করা এবং সবুজ উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদার করার ক্ষেত্রে অনেক অভিজ্ঞতা বিনিময় হতে পারে এবং সহযোগিতা জোরদার হতে পারে।