সহস্র বছরের সিছুয়ান ব্রোকেড ছেংতু বিশ্বদ্যালয় গেমসে আলো ছড়াচ্ছে
সলোমন দ্বীপপুঞ্জের আন্তর্জাতিক ছাত্রী জুলির চীনের গল্প
সলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রধানমন্ত্রী সোগাভারে সম্প্রতি চীনে একটি সরকারি সফরে আসেন। সফরের সময় দুই দেশ নতুন যুগে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও অভিন্ন উন্নয়নের একটি ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে এবং উন্নয়ন সহযোগিতা, বাণিজ্য, অবকাঠামো নির্মাণ, বেসামরিক বিমান চলাচল, শিক্ষা, পুলিশ, শুল্ক এবং আবহাওয়াসহ বহু দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করেছে। কুয়াংতোংয়ের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সলোমন দ্বীপপুঞ্জের ছাত্রী জুলির জন্য, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এবং চীনের মধ্যে সমৃদ্ধ সম্পর্ক তাকে উন্নয়নের আরও সুযোগ করে দিচ্ছে। জুলি বলেন,
“আপনি কি সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কথা জানেন? এটি একটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ, একই সঙ্গে একটি উন্নয়নশীল দেশ।”
সাক্ষাতকার দেওয়ার আগে, কুয়াংতোং ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজের সলোমনের ছাত্রী জুলি প্রতিবেদককে তার নিজের শহরের পরিচয় করিয়ে দেন। প্রকৃতপক্ষে, এমন একটি দেশ হিসাবে যেটি হাজার হাজার মাইল দূরে এবং চার বছর ধরে চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ এখনও অনেক চীনাদের কাছে কিছুটা দূরে এবং অপরিচিত। জুলি বলেন,
“আমি বলেছিলাম আমি সলোমন দ্বীপপুঞ্জ থেকে এসেছি, তারা জানে না সলোমন দ্বীপপুঞ্জ কোথায়। আমি বলেছিলাম এটি অস্ট্রেলিয়ার ঠিক পাশে এবং তখন তারা বুঝতে পারে। আমি মনে করি চীনারা খুব উষ্ণ ও সহায়ক। বিশেষ করে, যখন আপনি তাদেরকে পথের দিকনির্দেশনা জানতে চাইবেন, তারা খুব সাহায্য করে।”
প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সলোমন দ্বীপপুঞ্জে ৯’শটিরও বেশি বড় ও ছোট দ্বীপ রয়েছে। তাদের একটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইনফরেস্ট জলবায়ু এবং সারা বছর গরম থাকে। জুলি বলেন যে তিনি ধীরে ধীরে কুয়াংতোং-এর জলবায়ু এবং খাদ্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিচ্ছেন। জুলি বলেন,
"আমি গ্রীষ্মের সঙ্গে বেশ অভ্যস্ত। কিন্তু আমাকে শীতের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। আমার জন্য কুয়াংচৌতে শীতকাল সত্যিই একটু ঠান্ডা। আমি ক্যান্টোনিজ ডিম সাম এবং সকালের চা বেশ পছন্দ করি। বর্তমানে আমার প্রিয় চাইনিজ খাবার হল ডাম্পলিংস। আমি নিরামিষ স্টাফিং সবচেয়ে বেশি পছন্দ করি এবং গরুর মাংসের স্টাফিংও ভাল।"
জুলি কুয়াংতোং ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস পড়াশোনা করছেন। তিনি বলেন যে, সলোমন দ্বীপপুঞ্জের বৈদেশিক বাণিজ্য প্রচারে অবদান রাখার জন্য এই মেজরটি বেছে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, "আমার দেশের জন্য, এটি একটি খুব ভাল মেজর। কারণ, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ একটি উন্নয়নশীল দেশ, সেখানে অনেক ছোট, মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোগ রয়েছে। তারা তাদের পণ্যগুলিকে একটি বিস্তৃত বাজারে পাঠানোর আশা করে এবং তাদের জন্য এটি খুবই প্রয়োজনীয়। আমি মনে করি আন্তর্জাতিক ব্যবসা এই উদ্যোগগুলিকে তাদের বাজার প্রসারিত করা এবং এমন সুযোগগুলি পেতে সাহায্য করতে পারে যা শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ বাজারে পাওয়া যায় না।"
গত মাসে, জুলি ও অন্যান্য ১২জন আন্তর্জাতিক ছাত্র গবেষণা কার্যক্রমের জন্য কুয়াংতোং প্রদেশের জিয়াংমেন শহরে যান। স্থানীয় গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন, ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং যুব উদ্যোক্তা সম্পর্কে আরও জানতে তারা খাইভিং শহরের থাংখৌ নগর, সিনহুই জেলার ইয়ামেন নগরের জিংমেই গ্রাম, লিটল বার্ড প্যারাডাইস ন্যাশনাল ওয়েটল্যান্ড পার্ক, ছেনভি গ্রাম ও অন্যান্য স্থান পরিদর্শন করেন।
জুলি বলেন যে, এ ধরনের সুযোগ তাকে আরও ত্রিমাত্রিক উপায়ে চীনের উন্নয়ন বুঝতে এবং উপলব্ধি করতে সাহায্য করবে। তিনি চীনে তার পড়াশোনা উপভোগ করেন। তিনি বলেন,
“এখন পর্যন্ত, চীনে আমার শিক্ষকদের জন্য সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ। তারা আমাদের ভালভাবে যত্ন নেন, আমাদের সমর্থন করেন এবং আমাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত উন্নয়নে আমাদের সাহায্য করা যায়- এমন কার্যকলাপে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেন।"
জুলি বলেন, তিনি যখন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছিলেন, তখন তিনি লক্ষ্য করতেন যে, অনেক চীনা লোক সলোমন দ্বীপপুঞ্জে ব্যবসা করছে। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরালোভাবে বিকাশের সঙ্গে, ভবিষ্যতে আপনার জন্য আরও সুযোগ তৈরি হবে। এখন যা করতে হবে তা হল, চীনা ভাষা ভালোভাবে শেখা এবং নিজের দক্ষতা উন্নত করা।
তিনি বলেন, "আমি মনে করি চীনা ভাষা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। এশীয় অর্থনীতি দ্রুত বিকশিত হচ্ছে, বিশেষ করে চীন। আপনি যদি চীনা ভাষা ভালোভাবে শিখেন, তাহলে আপনি চীনের সঙ্গে আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা আরও ভালোভাবে করতে পারবেন।"
জুলি বলছিলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে চীন-সোলমন সম্পর্ক দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে এবং সাফল্য অর্জন করেছে; যা দুই দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর হয়েছে এবং আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন জোরদার করেছে। দুই দেশের অর্থনীতি সম্পর্কিত, দ্বিপাক্ষিক আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। জুলি এবারও দুই দেশের মধ্যে ধারাবাহিক সহযোগিতা বিষয়ে গুরুত্ব দেন এবং তিনি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের বৃহত্তর বিকাশ প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন,
“আমি যতবার আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলি, আমি তাদের চীনে আমার পড়াশোনা ও জীবন সম্পর্কে জানাই। ভবিষ্যত নিয়ে, আমার কোনো নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। তবে আমার সুযোগ থাকলে আমি চীনে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চাই।”