চীনের সিছুয়ান প্রদেশের তালিয়াং পাহাড়ের ক্লিফ গ্রামের প্রাথমিক স্কুল প্রসঙ্গ
ক্লিফ গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক কাওয়ের ক্লাসে মোট ৭০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বাচ্চাদের স্কুলে আসার পথে হাঁটাহাঁটি করে তিনি বাচ্চাদের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারেন। ক্লিফ গ্রামের স্কুলের প্রথম কর্মদিবসের কথা স্মরণ করে শিক্ষক কাও বলেন, এ স্কুলে পৌঁছাতে উঁচু সিড়ি অতিক্রম করতে হয়। তিনি উঁচু স্থানে দাঁড়িয়ে বেশ ভয় পান। তবে ইস্পাতের তৈরি সিঁড়ি ছিড়বে না—এই বলে তিনি নিজেকে প্রবোদ দেন। সিঁড়িতে ওঠার কিছুক্ষণ পর তিনি খেয়াল করেন, চারিদিকে কেবল ক্লিফ ও পাহাড়। পাহাড়ের অপর দিকেও পাহাড়। সেখানে কিছু গ্রাম দেখা যায়। অনেক বাচ্চা দূরের সেসব গ্রাম থেকে হেঁটে স্কুলে পড়াশোনা করতে আসে। তিনি অবাক হন।
২০২৩ সালের মে মাসে ক্লিফ গ্রাম পাহাড়াঞ্চল থেকে স্থানান্তর করা হয়। গ্রামবাসীরা সবই জেলায় নতুন বাড়িঘর পেয়েছে। সেই সময় প্রায় ৩০০ জন ছাত্রছাত্রীকেও ক্লিফ গ্রামের স্কুল থেকে স্থানান্তর করা হয়। তখন থেকে ক্লিফ গ্রামের প্রাথমিক স্কুল ঐতিহ্যিক চিহ্নে পরিণত হয়েছে।
অতীতে ক্লিফ গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের বাচ্চারা তৃতীয় শ্রেণী পাস করার পর জেলার প্রাথমিক স্কুলের পরীক্ষা দিয়ে সেখানে যেতে চাইত। তবে, শিক্ষক কাও আসার পর তাঁর ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা কেউ জেলার স্কুলে যেতে চাইত না। তারা মনে করে, শিক্ষক কাও প্রিস্কুল পর্যায় থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত সবসময় মায়ের মতো তাদের পাশে আছেন। তাই তারা জেলার প্রাথমিক স্কুলে পড়াশোনা করতে চায় না। মেয়ে ছিরিলুও খুবই অন্তর্মুখী। সে শিক্ষক কাওকে বলল, “আপনি আমার আপন মায়ের মতো। আপনাকে ছেড়ে আমি যেতে চাই না।” শিক্ষক কাও তাকে বলেন যে, স্নাতক হওয়ার পর সবাইকেই নতুন স্কুলে যেতে হবে। ভালো করে পড়াশোনা করে একদিন চাওচুয়ে জেলার স্কুলে ভর্তি হতে তাদের উত্সাহ দেন কাও।