চীনা বাচ্চাদের শ্রম ক্লাস
কৃষিকাজের বেলায় প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে এক বা দুই ধরনের উদ্ভিদ বা পশু পালনের চেষ্টা করতে হবে শিক্ষার্থীদের। তৃতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণীতে শাকসবজি চাষ করা বা পাখি লালনপালন শেখানো হবে। পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ফল গাছ লাগানো বা ছাগল, খরগোশ, ইত্যাদির যত্ন নেনোয়া শেখানো হবে।
ঘরের কাজের মধ্যে বাচ্চাদের বয়সভেদে বিভিন্ন কাজ শেখানো হবে। যেমন, নিয়মিত ঘরের টেবিল ও মাটির ধুলো পরিষ্কার করা, থালা-বাসন ধোয়া, নিজের কাপড়চোপড় ধোয়া, ভিন্ন ধরনের আবর্জনা ভাগ করা, ইত্যাদি। নিজেদের পড়াশোনার বই, খেলনা, স্টেশনারি ও ব্যাগ গুছিয়ে রাখার শিক্ষাও দেওয়া হবে। সময়মতো টেবিলের জিনিস সুশৃঙ্খলভাবে রেখে দেওয়াও শিক্ষার্থীদের শেখানো হবে।
রান্নাবান্নায় পিতামাতাকে সাহায্য করা শেখানো হবে শিক্ষার্থীদের। ফলের খোসা ছাড়ানো বা শাকসবজি ও ফলের পুষ্টিকর উপাদান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করবে তারা।
হস্তকর্মশিল্পের বিভিন্ন দিক সম্পর্কেও শেখানো হবে শিক্ষার্থীদের। কাগজ কাটা, মাটির ভাষ্কর্য বানানো আর বুননসহ বিভিন্ন বিষয় থাকে ক্লাসে। এসব ক্লাসের মাধ্যমে ঐতিহ্যিক হস্তকর্মশিল্প তৈরির প্রক্রিয়া তারা বুঝতে পারবে।
তা ছাড়া, আধুনিক পরিষেবা শিল্পের উন্নয়নের সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট কারিগরি প্রশিক্ষণও অতি প্রয়োজন। তাই মাল পরিবহন, ডাক বা তথ্য সম্প্রচারসহ বিভিন্ন খাতে ইন্টার্নশিপের সুযোগ তৈরিতে চেষ্টা করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্বেচ্ছাসেবক শ্রমের মাধ্যমে অন্যদের সহায়তা দেওয়া যায়। ছুটিতে ক্যাম্পাসে বা আবাসিক কমিউনিটিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অন্যদের সেবা করাও ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি ভালো সুযোগ। এভাবে সামাজিক পরিষেবার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে তারা, সমাজের জন্য অবদান রাখার চেতনাও সৃষ্টি হবে তাদের মনে।
মোদ্দাকথা, শ্রমের কাজ শেখা একটি গর্বের ব্যাপার। শ্রমের মাধ্যমে অর্জিত সাফল্য নিজের জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার। তাই বাচ্চাদের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই শ্রমের কাজ করে সাফল্য অর্জনের অভ্যাস তৈরি করা অতি জরুরি। অলস হওয়া থেকে তাদের বাঁচাতে হবে এবং এভাবেই তারা দেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখতে পারবে।