চীনা বাচ্চাদের শ্রম ক্লাস
সম্প্রতি চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন প্রদেশের প্রাথমিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ‘শ্রম ক্লাস’ চালু হবে। এ ক্লাসের মাধ্যমে ঘরবাড়ি পরিষ্কারের কাজ, রান্নাবান্না ও মেশিন মেরামতসহ বিভিন্ন দক্ষতা শিখতে পারবে শিশুরা।
আসলে শ্রম ক্লাস ১৯৭০ ও ১৯৮০ সালের পরের প্রজন্মের চীনাদের জন্য পরিচিত ব্যাপার। তাদের ছোটবেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে শ্রম ক্লাস ছিল। তবে ২০০০ সালের পর এমন ক্লাস ধীরে ধীরে বাতিল করা হয়। আসলে, জীবনযাপনের জন্য বিভিন্ন ধরনের শ্রমে দক্ষতা অর্জন অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। বিশেষ করে মহামারীর কারণে অনেকেই আজকাল বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করছেন। আগে ক্যান্টিন বা রেস্তোরাঁয় খাবার অর্ডার করে সেখানে বসেই খাওয়া যেত। তবে, মহামারীর কারণে যদি কোনো এলাকা লকডাউন হয়, তখন নিজে রান্না করার খুবই একটা বিকল্প নেই। এসময় বাড়িঘরও নিজেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। পরিচ্ছন্ন পরিবেশ সারাদিনে ঘরে থাকা লোকদের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। তাই শ্রম ক্লাস পুনরায় শুরু হওয়া শিক্ষার্থীদের জীবনযাপনের দক্ষতা অর্জনে অনেক ইতিবাচক ভুমিকা পালন করবে। আজকের আসরে আমরা চীনের শ্রম ক্লাসের মূল বিষয় এবং চীনাদের দৃষ্টিতে শ্রম ক্লাসের ভুমিকা নিয়ে আলোচনা করবো।
শ্রম নিয়ে চীনের বিভিন্ন প্রজন্মের লোকদের অভিজ্ঞতা ভিন্ন ভিন্ন। তবে বিভিন্ন কাজে দক্ষতা অর্জন নিজেদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন অনেকেই। ১৯৬০ সালের পর জন্ম নেওয়া বাচ্চাদের জন্য শীতকালে উত্তর চীনের আবহাওয়া বেশ ঠাণ্ডা ছিল। সেই সময় স্কুলের ক্লাসে হিটিং ব্যবস্থা ছিল না। তাই বাচ্চারা স্কুলে চুলা ও কয়লা পিণ্ড তৈরি শিখতো।
তখন তারা ফ্ল্যাটবেড ট্রাক দিয়ে কয়লার পাউডার ও মাটি নিয়ে আসতো। অল্প পানিতে কয়লা ও মাটি মিশিয়ে কেক বানানো হতো। মানে কয়লার কেক। তারপর সেগুলো সূর্যালোকে কয়েক দিন শুকানোর পর ক্লাসরুমের কাছাকাছি রুমে রেখে সেগুলো ব্যবহার করা হতো। তখন মাধ্যমিক স্কুলের শ্রম ক্লাস সংগীত ও চারুকলা ক্লাসের মতো সপ্তাহে একদিনই হতো; তবে তা বাচ্চাদের সবচেয়ে প্রিয় ক্লাসগুলোর অন্যতম ছিল।