চাকরি নেওয়ার আগে কম্পানি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে
ছেলে হু পান বেইজিংয়ে চাকরি করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মেজর ছিল শহর ও জেলা পরিকল্পনা। এক বছর আগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। তিনিও চাকরির আবেদন করার আগে কম্পানি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়েছেন। তিনি বলেন, যুবকালটা বেশিদিন স্থায়ী হয় না। এই মূল্যবান সময় একটি ভুল কম্পানি কাজ করে নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।
ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কর্মসংস্থান নির্দেশনা কেন্দ্রের একজন শিক্ষক মনে করেন, কম্পানি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পেশাদার পরামর্শ ক্লাস আছে। এসব ক্লাসে ধীরে ধীরে একটি উপযোগী চাকরি খুঁজে পাওয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়। তাই শিক্ষার্থীরা কাজটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে। তারা আত্মসমালোচনা ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে নিজেদের শক্তিশালী দিকগুলো খুঁজে বের করে এবং কর্মসংস্থানের জন্য কীভাবে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে ও উপস্থাপন করতে হবে, তা জানে। কর্মসংস্থানসংশ্লিষ্ট পরামর্শক্লাস শিক্ষার্থীদের আরও দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলছে।
তালিয়ান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিয়াং খেয়াল করেন যে, অনেক কম্পানি শিক্ষার্থীদের এই খোঁজ-খবর নেওয়ার বিষয়টাকে পছন্দ করে। কারণ, তারা মনে করে, শিক্ষার্থীরা কম্পানি সম্পর্কে যত বেশি জানবে, তত কম্পানির প্রতি আকৃষ্ট হবে। কম্পানির সবল দিকগুলো সম্পর্কে সম্ভাব্য কর্মী বা কর্মকর্তারা যত বেশি জানবে তত ভালো। এতে সেরা শিক্ষার্থীরা কম্পানি সম্পর্কে আগ্রহী হবে ও কম্পানি ভালো কর্মী পাবে। এতে চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগেই কর্মপ্রার্থীদের মধ্যে কম্পানি সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে, যা সুবিধাজনক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থীদের উচিত যুক্তিসঙ্গতভাবে কম্পানি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া। এতে করে তারা তাদের নিজেদের সবলতা ও দুর্বলতা এবং কম্পানির চাহিদা ও কর্মপরিবেশ সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করতে পারে। এর ফলে তারা যথেষ্ট জ্ঞান নিয়েই কর্মজীবনে প্রবেশ করার সুযোগ পায়, তা একটি প্লাস পয়েন্ট। তা না হলে, একটা অজান-অচেনা কম্পানি কাজ করতে গিয়ে শুরুতে অনেক সমস্যার সম্মুখীণ হতে হয়। নতুন জায়গায় খাপা খাওয়ানোর একটা ব্যাপার থাকে। যদি শিক্ষার্থীরা কম্পানি সম্পর্কে আগেভাগেই পর্যাপ্ত তথ্য পেয়ে যায়, তবে খাপ খাওয়ানোর বিষয়টি সহজ হয়ে যায়।
বার্ষিক আয়, কাজের সময় ও কাজের চাপ ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী অনেক শিক্ষার্থী। এ অবস্থায় ভুল সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়াও অসম্ভব নয়। এ সম্পর্কে শিক্ষক ইয়ুর পরামর্শ হলো, ‘নদীতে সাঁতার কাটা শেখা প্রয়োজন।’ যদি বিভিন্ন কম্পানি বা শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাওয়া যায়, তবে তা আরও ভালো। ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করার চেয়ে সরাসরি কাজ করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় সবসময়ই বেশি কার্যকর। ইন্টার্নশীপের মাধ্যমে কম্পানি কাজে পরিবেশ, কর্মীদের সঙ্গে কম্পানির আচরণ, ইত্যাদি সহজে বোঝা যায়।