সিএমজি সম্পাদকীয়: চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপ ইইউকেই প্রভাবিত করবে
সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের বিরোধিতা সত্ত্বেও ইউরোপীয় কমিশন স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে যে, ৩১ তারিখ থেকে চীন থেকে আমদানি করা বৈদ্যুতিক গাড়ির উপর ৫ বছরের চূড়ান্ত কাউন্টারভেলিং শুল্ক আরোপ করবে। এর মধ্যে বিওয়াইডি, গিলি ও শাংহাই স্বয়ংচালিত শিল্প কর্পোরেশনকে যথাক্রমে ১৭, ১৮.৮ ও ৩৫.৫ শতাংশের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে, টেসলা ছাড়া অন্যান্য ‘সহযোগী’ গাড়ি কোম্পানিগুলোকে ২০.৭ শতাংশের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে, আর সব ‘অসহযোগী’ গাড়ি কোম্পানির উপর ৩৫.৩ শতাংশের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। এই সিদ্ধান্তে চীন স্পষ্টভাবে অসম্মতি ও মেনে না নেয়ার মনোভাব প্রকাশ করেছে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিষ্পত্তি প্রক্রিয়ার অধীনে মামলা দায়ের করেছে।
চীন কেন ‘অসম্মতি’ জানিয়েছে? কারণ ইইউ’র আচরণ ‘অযৌক্তিক, অবৈধ’, ‘ন্যায় প্রতিযোগিতার’ নামে ‘অন্যায় প্রতিযোগিতা’ করে, বাণিজ্য সংরক্ষণবাদ করে। এই আচরণ শুধু চীন-ইইউ শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইন সহযোগিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না, বরং ইউরোপীয় ভোক্তাদের আরও বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে, ইইউ’র বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং নিজের সবুজ রূপান্তর প্রক্রিয়া নিচে টেনে আনবে।
ইইউ’র সঙ্গে আলোচনায় চায়না চেম্বার অফ মেকানিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারি চীনের একমাত্র শিল্প প্রতিনিধি। এর সহ-সভাপতি শি ইয়ং হং সিএমজি’র সাক্ষাত্কারে বলেন, ইইউ’র তদন্তের প্রয়োজনীয়তা ও বৈধতার অভাব রয়েছে, তাই এটা শুধু একটি ‘রাজনৈতিক ঘোষণা’। আলোচনার সময় ইইউ’র প্রযুক্তিগত কর্মকর্তারা মনে করেন কিছু বিষয় গ্রহণযোগ্য, তবে বিপুল রাজনৈতিক চাপে তারা দ্রুত মত পরিবর্তন করেছেন, সমস্যা সমাধানের আন্তরিকতা নেই।
শুধু তাই নয়। বিশেষভাবে কোম্পানি বাছাই করা থেকে তথাকথিত ‘ভর্তুকি’ প্রকল্প কৃত্রিম বনোয়াট ও অতিরঞ্জন এবং বাণিজ্যিক সংবেদনশীল তথ্য প্রদানের জন্য চীনা কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ ও হুমকি দেওয়ার পর্যন্ত, ইইউ’র এহেন আচরণ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার উন্মুক্ত, ন্যায়সঙ্গত ও বৈষম্যবিরোধী নীতি লঙ্ঘন করেছে, এবং এটি তাদের প্রচারিত মুক্ত বাজারের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। এর পেছনে রয়েছে ইইউ অর্থনৈতিক নীতি আরও রক্ষণশীল ও ‘রাজনীতিকরণের’ কারণ, আর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে আটকানোর ধারণার প্রভাব। কিন্তু এর ফলে শুধুমাত্র উভয়েরই হার এবং ইইউ’র নিজেকেই একাধিক মূল্য চুকাতে হবে।