‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রস্তাবের মাধ্যমে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী স্থায়ী হবে
বড় হয়ে আলিফা চীন একজন ডাক্তার হতে চায় এবং চীনে চিকিত্সা বিষয়ে লেখাপড়া করতে চায়। যে চীনা ডাক্তারের হাতে আলিফা চীনের জন্ম হয়েছিল, তাকে সে চীনা মা বলে ডাকে এবং সে নিজে সেই চীনা মায়ের মতো অন্যদেরকে সাহায্য করতে চায়। ছোট একটি মৈত্রীর বীজ এ মেয়েটির মনে রোপিত হয়েছে এবং বিশ্বাস করা যায়, ভবিষ্যতে সে দু দেশের বন্ধুত্বের ফল হবে।
২০২৩ সালের ২৭ নভেম্বর, ঢাকায় চীনা দূতাবাস এবং বাংলাদেশে চাইনিজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ যৌথ নির্মাণ বিষয়ক এক ফটোগ্রাফি ও পেইন্টিং প্রদর্শনী। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রস্তাব উত্থাপিত হবার পর থেকে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতার দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে এবং বাংলাদেশে চীনের বন্ধুর সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ করে যুবকদের মধ্যে অনেকে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রীর দূত হয়েছে। এবার প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীদের যুবকদের অনেকে পেশাদার ফটোগ্রাফার ও চিত্রশিল্পী নন, তবে তারা চীন ও বাংলাদেশের সুন্দর দৃশ্য ও নিয়ম দেখেছেন এবং সেগুলো নিজের শিল্পকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন।
সংস্কৃতি হলো বিভিন্ন সভ্যতার অভিন্ন ভাষা। চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বিনিময়ের ইতিহাস বৌদ্ধ ধর্মের বিশিষ্ট সন্ন্যাসী অতীশ দীপঙ্করের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ হয় এবং হাজার বছর ধরে প্রাচ্যের এ দুটি সভ্যতা পস্পরের কাছ থেকে শিখেছে, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে যাবার অক্ষয় প্রেরণা।
শিক্ষাও ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ কাঠামোতে চীন ও বাংলাদেশ বিনিময়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধি হিসেবে চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও ভাল সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখে। ২০০৬ সালে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে চালু হয় বাংলাদেশের প্রথম কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট। ২০২৩ সালে চীনের ইয়ুন নান বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তিভুক্ত হয়ে চীন-দক্ষিণ এশিয়া সমাজ ও সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি। ভবিষ্যতে দুদেশের বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষার্থীরা এ কেন্দ্রের মাধ্যমে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রস্তাবসহ নানা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয় নিয়ে যৌথ গবেষণা চালাতে পারবেন।
প্রাচীন রেশম পথ থেকে বর্তমান ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ প্রস্তাব, বেসরকারি বিনিময় থেকে সরকারি সহযোগিতা, র্ধম সংস্কৃতি থেকে অর্থ-বাণিজ্য পর্যন্ত হাজার বছর ধরে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে আদান-প্রদান কখনও ব্যাহত হয়নি। হাজার বছরের এ মৈত্রী দু দেশের মানুষের বিনিময়ের মধ্য দিয়ে আরও গভীর ও স্থায়ী হবে বলে বিশ্বাস করি।