‘এক অঞ্চল, এক পথ’ ও পরিবর্তনের শক্তি
মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার ধারণা হল ‘যুগের প্রশ্নের’ চীনা উত্তর, যাতে বিশ্ব পরিস্থিতির বিকাশ ও বিবর্তনকে প্রতিফলিত করে। এই ধারণা জোর দেয় যে, প্রতিটি জাতি, দেশ ও ব্যক্তির ভবিষ্যত এবং ভাগ্য ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। এই ধারণা দীর্ঘস্থায়ী শান্তি, সর্বজনীন নিরাপত্তা, অভিন্ন সমৃদ্ধি, উন্মুক্ত, সহনশীল ও পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর বিশ্ব গড়ার পক্ষে। সহজেই দেখা যায় যে, এই ধারণা কিছু দেশের আধিপত্যবাদী চিন্তাধারার বিরুদ্ধে এবং শান্তি, উন্নয়ন, ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের পক্ষে।
মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠনের চিন্তাধারা কেবল সুন্দর আশা-আকাঙ্ক্ষা নয়, বরং বাস্তবায়নের পথ ও অভিযানের কার্যক্রমও রয়েছে এর। গত দশ বছরে, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ থেকে শুরু করে ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন উদ্যোগ’, ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ’ এবং ‘বৈশ্বিক সভ্যতা উদ্যোগ’ পর্যন্ত, চীন ক্রমাগতভাবে মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলার কৌশল পেশ করেছে এবং বিশ্বের জন্য বিশাল কল্যাণ বয়ে এনেছে।
দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বেগবান হওয়াকে এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়। বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ ও ‘গ্লোবাল সাউথ’-এর সদস্য হিসেবে চীন, প্রায় ২০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সহযোগিতা করেছে এবং ইথিওপিয়া, পাকিস্তান ও নাইজেরিয়াসহ প্রায় ৬০টি দেশে ১৩০টিরও বেশি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এসব প্রকল্প দারিদ্র্যবিমোচন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মহামারী মোকাবিলা, জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবিলাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত। প্রায় ৩০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ এতে উপকৃত হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর বাণিজ্যিক বিনিময় ৪.১ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ১.৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের কল্যাণ বয়ে আনবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
নতুন যুগে নতুন চিন্তার প্রয়োজন। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের এই যুগে সকল দেশ অভিন্ন ভাগ্যের একটি জাহাজে সামনে এগিয়ে চলেছে। ভবিষ্যতেও হাতে হাত রেখে, সহযোগিতার ভিত্তিতে, মানবজাতিকে অভিন্ন কল্যাণ অর্জন করতে হবে। এটাই একমাত্র সঠিক বাছাই।