‘এক অঞ্চল, এক পথ’ ও পরিবর্তনের শক্তি
সেপ্টেম্বর ২৭: পৃথিবীর দীর্ঘ ইতিহাসে দশ বছর মাত্র একটি ছোট মুহূর্তের মতো, কিন্তু একটি ধারণা দিয়ে বিশ্বকে পরিবর্তন করার শক্তি যোগানোর মতো এ যথেষ্ট সময়।
‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগটি প্রায় এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে এবং সারা বিশ্বে ৪ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছে। যখন কোভিড-১৯ মহামারী বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, তখন চীনা ভ্যাকসিন ও চিকিত্সাসেবাকে অনেক দেশ ‘জীবনের অভিভাবক’ হিসেবে বিবেচনা করেছে। আর এসবের পেছনে ছিল চীনের উত্থাপিত ‘মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ’ শীর্ষক ধারণা।
২০১৩ সালের মার্চ মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং মস্কো ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসে তাঁর বক্তৃতায় প্রথমবারের মতো ‘মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ’ ধারণা পেশ করেন। তারপর থেকে এই ধারণাটি ক্রমাগত সমৃদ্ধ ও বিকশিত হয়েছে। এটি টানা ছয় বছর ধরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবগুলোতে স্থান পেয়েছে এবং বহুবার শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ও ব্রিকসসহ বিভিন্ন বহুপাক্ষিক সংস্থার প্রস্তাব বা ঘোষণাতে স্থান পেয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ব্যাপক স্বীকৃতি ও সমর্থন পেয়েছে এই ধারণা। এর পেছনের কারণ কী?
গতকাল (মঙ্গলবার) চীনের কর্তৃপক্ষ ‘যৌথভাবে মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গড়ে তোলা: চীনের উদ্যোগ ও কার্যক্রম’ শিরোনামে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। এতে সার্বিকভাবে মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠনের চিন্তাধারা ও অনুশীলনের সাফল্য তুলে ধরা হয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে উক্ত প্রশ্নের উত্তর রাখা হয়।
একটি যুগান্তকারী চিন্তাভাবনা ও ধারণার জন্মকে সেই সময়ের পরিবেশ থেকে আলাদা করা যায় না। অন্য কথায়, এটি সময়ের সমস্যা সমাধানের জন্য জন্মে। দশ বছর আগে যখন চীন ‘মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের সমাজ’ শীর্ষক ধারণা উত্থাপন করেছিলো, তখন মানুষের পক্ষে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন ছিল যে, পরবর্তীতে বিশ্ব পরিস্থিতি এতো জটিল ও কঠোর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে - বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে বড় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পর্যন্ত, মহামারী থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত পর্যন্ত, বিশ্ব অশান্তি ও পরিবর্তনের একটি নতুন সময়ে প্রবেশ করেছে। এ পরিবর্তন মানবজাতিকে কোথায় নিয়ে যাবে? এটি এখন যুগের প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।