কিসিঞ্জারের কূটনৈতিক প্রজ্ঞা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পুনর্বিবেচনা করা উচিত: সিএমজি সম্পাদকীয়
বর্তমানে চীন-মার্কিন সম্পর্ক আবারও এক সন্ধিক্ষণে এসেছে। আমরা গত পাঁচ বছরে চীনা নেতা ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কিসিঞ্জারের বৈঠকের প্রেস রিলিজগুলো সংগ্রহ করেছি। দেখা যাচ্ছে যে, তার বক্তৃতার মূল কথাগুলো ছিল খুবই ঘনীভূত বোঝাপড়া, সংলাপ, যোগাযোগ এবং মতভেদ নিয়ন্ত্রণ। কিসিঞ্জারের বাস্তববাদী এবং যুক্তিবাদী কূটনৈতিক চিন্তাভাবনা যদি মার্কিন সরকারের চীন নীতির সঙ্গে তুলনা করা হয়, তবে চীন-মার্কিন সম্পর্কের মূল সমস্যা আরও স্পষ্টভাবে বোঝা যায়।
মার্কিন কিছু রাজনীতিবিদ প্রায়শই বলেন যে চীনের উন্নয়নের পথ, রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও মূল্যবোধগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এবং এগুলোকে চীনের শত্রুতা ও দমনের ভিত্তি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এ পার্থক্যগুলো মাত্র তৈরি হয়েছে—এমন কিছু নয়। স্নায়ুযুদ্ধের শিখরের ঐতিহাসিক পটভূমিতে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে পারস্পরিক বিচ্ছিন্নতার বরফ ভেঙেছে এবং "প্রশান্ত মহাসাগর জুড়ে মিল" অর্জন করেছে, যা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কেন তা করা সম্ভব হয়েছিল? এটি শুধুমাত্র সময় ও ধারার সৃষ্টি করেনি, বরং আরও গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল যে, চীন ও মার্কিন নেতারা বুঝতে পেরেছিলেন যে, শত্রুকে বন্ধুতে পরিণত করা শুধু একে অপরের উপকারে আসে না, বরং বিশ্বের জন্যও কল্যাণকর। তাই, অসাধারণ কৌশলগত প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও সাহসিকতার সঙ্গে দুই পক্ষ আদর্শগত পার্থক্য অতিক্রম করে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
আজ, ৫২ বছর পর আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে এবং চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যও পরিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা থেকে লাভবান হবে এবং সংঘর্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হবে—এই যুক্তিটি পরিবর্তিত হয়নি। এর আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে ফোনালাপে বা এবার কিসিঞ্জারের সাথে বৈঠকে যাই হোক-না-কেন, চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বহুবার উল্লেখ করেছেন যে, চীন-মার্কিন সম্পর্কের স্থিতিশীল বিকাশের মূল চাবিকাঠি হল পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং জয়-জয় সহযোগিতার তিনটি নীতি অনুসরণ করা। এটি চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অতীতের বিনিময়ের অভিজ্ঞতার সারসংক্ষেপ এবং নতুন যুগে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঠিকভাবে চলার পথ।